ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬ই আশ্বিন ১৪৩২


মহাঅষ্টমী আজ, হবে কুমারী পূজা


৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৬

সংগৃহীত

চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এই পূজার মহা অষ্টমী আজ। আজ অগ্নি, বায়ু, বস্ত্র, পুষ্প ও মাল্য-এই পাঁচ নৈবেদ্যে পূজিত হবেন দেবীদুর্গা। নির্জলা উপবাস থেকে সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দেবেন। হবে সন্ধীপূজা। এদিন সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ‘কুমারী পূজা’। কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবীজ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা।

 

এদিন রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে প্রতিবছরই আড়ম্বরপূর্ণ ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে কুমারী পূজা উদযাপন করেন হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

 

রামকৃষ্ণ মিশন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কুমারী পূজা হবে সকাল ১১টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১টায়। এর আগে মহাষ্টমী পূজা আরম্ভ হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে, পুষ্পাঞ্জলি হবে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে এবং মধ্যাহ্ন প্রসাদ দুপুর ১২টায়। আর মহাঅষ্টমী উপলক্ষে সন্ধিপূজা হবে সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে এবং সমাপন হবে সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে।

 

শাস্ত্রমতে কুমারী পূজার উদ্ভব হয় বানাসুর বা কোলাসুরকে হত্যার মধ্য দিয়ে। কোলাসুর নামক অসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করে নেয়। কোলাসুর স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হোন। সে সকল দেবগণের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী দেবতাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী মানবকন্যারূপে জন্মগ্রহণ করেন এবং কুমারী অবস্থায় কোলাসুরকে হত্যা করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। প্রতি বছর দুর্গাদেবীর মহাঅষ্টমী পূজাশেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

 

পুরোহিতদর্পণ প্রভৃতি ধর্মীয় গ্রন্থে কুমারী পূজার পদ্ধতি এবং মাহাত্ম্য বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। বর্ণনানুসারে কুমারী পূজায় কোনও জাতি, ধর্ম বা বর্ণভেদ নেই। দেবীজ্ঞানে যেকোনো কুমারীই পূজনীয়। তবে সাধারণত ব্রাহ্মণ কুমারী কন্যার পূজাই সর্বত্র প্রচলিত। এ ক্ষেত্রে এক থেকে ১৬ বছর বয়সী যেকোনো কুমারী মেয়ের পূজা করা যায়। অনেকের মতে ২ বছর থেকে ১০ বছরের মেয়েদের পূজা করা যায়।

 

শ্রীরামকৃষ্ণের মতে- সব স্ত্রীলোক ভগবতীর এক একটি রূপ। শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর বেশি প্রকাশ। দুর্গাপূজার অষ্টমী বা নবমীতে সাধারণ ৫ থেকে ৭ বছরের একটি কুমারীকে প্রতিমার পাশে বসিয়ে পূজা করা হয়। চণ্ডীতে বলা হয়েছে— ‘যা দেবী সর্বভূতেষু; মাতৃরূপেণ সংস্থিতা। নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্য মধ্যে মায়ের রূপ’।