ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে ভুল বার্তা দিচ্ছে পুশইন, ১৪’র নির্বাচনে অবস্থান ভুল ছিল: শ্রী রাধা দত্ত

বহুল আলোচিত ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল জাতীয় পার্টি। একপর্যায়ে সফরে আসেন তখনকার ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেন তিনি। বৈঠক করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে।
এরপরই ভোটে ফেরে জাতীয় পার্টি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১৫৩ জন ভোটের আগেই জিতে যান। সেইবার ভারতের কৌশলগত অবস্থানে সঠিক ছিল না; ২০১৮ ও ২০২৪-এর একতরফা নির্বাচনের স্বীকৃতি এবং বিজেপির কিছু নেতার কথাবার্তায় ভারতবিরোধিতা বেড়েছে বাংলাদেশি তরুণদের মাঝে— এমনই মনে করেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক ও ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রী রাধা দত্ত।
তিনি বলছিলেন, দিল্লির অবস্থান সঠিক ছিল বলে আমার মনে হয় না। কারণ, আমরা অনেক সময় বলেছি যে এগুলো বাংলাদেশের বিষয়, আমরা কারও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। কিন্তু আপনি যেটা বললেন (চৌদ্দ এর ভোট) সেটার সাথে তো তা দ্বান্দিকই মনে হচ্ছে। তারপর আমরা দেখেছি, কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছে, আমি ওখানে গেছি কিন্তু কিছু বলবো না।
দীর্ঘদিন দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই অধ্যাপক বলছিলেন, কীভাবে ভোটকে কেন্দ্র করে ভারত সরকারের ওপরও ক্ষুব্ধ হয়েছে বাংলাদেশি তরুণরা।
ড. শ্রী রাধা দত্তের মতে, বিশেষ করে আমি বিশ্বাস করি যে, যারা প্রথমবারের মতো ভোটার হয়েছে তারা অনেক জায়গায় ভোট দিতে পারেনি, ১৮-এ পারেনি, ২৪-এ পারেনি। তো তাদের রাগ হয়েছে যে আওয়ামী লীগ এটা কী করছে। আর ভারত কেন সমর্থন দিচ্ছে। ভারত তো বড় গণতান্ত্রিক দেশ, সে কী করে এটা?
২০২৪ এর ৫ আগস্টের পর থেকে দিল্লিতে অবস্থান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত চাইলেও জবাবই দেয়নি দিল্লি। শ্রী রাধা দত্ত বলছিলেন, কেবল এই ইস্যুতে আটকে থাকতে পারে না দুই দেশের সম্পর্ক।
তিনি এ নিয়ে বললেন, আমার মনে হয় না ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে চাইবে। কারণ যেটা ধারণা হচ্ছে, উনার নিরাপত্তাটা এখানে আমরা নিশ্চিত করতে পারবো না। অনেক কিছু পিপল টু পিপল করার সুযোগ আছে। আমরা আগে করেছি, আরও করতে পারবো। কিন্তু ওই পয়েন্ট ধরে থাকলে সম্পর্ক ভালোর দিকে যাবে না।
বাংলা ভাষাভাষী আর মুসলিম হলেই সম্প্রতি অনেককে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে, তারও সমালোচনা করলেন ড. শ্রী রাধা দত্ত। বললেন, হুট করে এখন এমন একটা সিচুয়েশন, বাংলা বললে মানে তারা বাংলাদেশি। মানবিক দিক থেকে আমরা কেউ এটা একদম গ্রহণ করি না। বিজেপি নেতারা কিছু খুবই খারাপ টাইপের মন্তব্য করেছে। তার মানে যে সরকার তার পলিসি পরিবর্তন করেছে সেটা হয়তো না।
বাংলাদেশ ভারতের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক অনেকটা স্বাভাবিক হবে বাংলাদেশে নির্বাচনের পর, বলছিলেন ড. শ্রী রাধা দত্ত।