এজলাসে কে দিল ‘আইএসের টুপি’

হলি আর্টিসান হামলার বিচারের রায়ের সময় এক আসামির মাথায় আইএসের লোগো সম্বলিত টুপি দেখে নানা প্রশ্ন জেগেছে। এত কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে নিয়ে আসামিকে কে দিলো এই টুপি সেটি নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। তবে এটি তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে। একই সাথে এজলাসে ‘আইএসের প্রতীকবাহী টুপি’ পরার বিষয়টি তদন্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু।
তিনি বলেন, ‘এদেশে আইএস’র কোনো অস্তিত্ব নেই। জঙ্গিরা বিক্ষিপ্তভাবে পরিকল্পনা করে এ হামলা চালিয়েছে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেতে তারা এটি চালিয়েছে।’
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর এমন কথাই বলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু।
‘তারা বোঝাতে চেয়েছে আইএসের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রমাণ মিলে নাই।’
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তষ্ট। এ রায় কার্যকর হলে ভবিষ্যতে কেউ এরকম নৃশংস কাজ করার সাহস পাবে না।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসামিরা চাইলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবে। এ সুযোগ তাদের রয়েছে।
শুধু রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবিই নয়, আদালতে আসা অনেকেই বলতে থাকেন এর সুষ্ট তদন্ত হওয়া উচিত। কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান আলোচিত গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা মামলায় আট আসামির মধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন। বেকসুর খালাস পেয়েছেন একজন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।
দেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস এ হামলায় ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয়, একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক ও দু’জন বাংলাদেশিসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম।
হামলার পর জিম্মি অবস্থার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছিলেন পাঁচ জঙ্গি। তারা হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জল।
এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও ৮ সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি।