ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১লা আশ্বিন ১৪৩২


আজ থেকে কার্যকর সড়ক আইন


১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:৪৮

বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন আজ রোববার থেকে কার্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “প্রথমবারে বড় শাস্তি দেওয়া হবে না, শাস্তির পরিমান ধাপে ধাপে হবে।”

রোববার দুপুরে রাজধানীর এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে সড়ক নিরাপত্তা আইন ও সড়ক পরিবহন আইন শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “সারা দেশে ধর্মঘট করে একটা অচল অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই চ্যালেঞ্জ আমি মোকাবিলা করে আসছি। এখনও বিভিন্ন জায়গায় সড়ক আইন মানে না। ফ্রি-স্টাইল চলছে।"

“আমি আজকে এ কথাই বলতেই আসছি, রাস্তায় চলতে গেলে শৃঙ্খলা মানতে হবে। নতুন আইন প্রয়োগ হলে সড়কে শৃঙ্খলা আসবে। এ আইন করা হয়েছে সড়কের শৃঙ্খলার জন্য।"

“দেশের কাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু সমস্যা সড়কের শৃঙ্খলায়। আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮।”
সড়ক পরিবহন আইন প্রয়োগে সরকার কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে জানয়ে মন্ত্রী বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীদেরও দেখি রাস্তা এপার থেকে ওপারে যাচ্ছে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে। এগুলো মোকাবিলা করে আমাকে চলতে হচ্ছে।"
“আইনের বাস্তবায়ন দুই সপ্তাহ আমরা একটু শিথিল করেছিলাম। এই অ্যাওয়ারনেসটা অনেকে হয়তো জানে না। কোন অপরাধ, কোন বিশৃঙ্খলার জন্য কি শাস্তিটা পেতে হবে। তার জন্য আমি দু-সপ্তাহ সময় দিয়েছি। এখন আজকে থেকে আমাদের এই আইন কার‌্যকর হবে।"

“এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, এই কাজ করতে আপনারা সবাই আমাকে একটু সহযোগিতা করবেন, কারণ এই কাজটি অসম্ভবের মত হয়ে গেছে। কিন্ত অসম্ভবকে আমি ভালবাসি, আমি মনে করি জীবন চ্যালেঞ্জ অতিক্রমের এক দীর্ঘ যাত্রা। চ্যালেঞ্জকে ভালবাসতে হবে। চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করার সাহস যদি না থাকে তাহলে কোন দিন এগুতে পারবে না।”

আলোচনা সভা শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে আবারও সাংবাদিকদের প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়।

পুলিশ বলছে তাদের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয় নাই, আজকে থেকে কার্যকরের ঘোষণা দিলেও আইনটি রাস্তায় কার্যকর নাই কেন জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “মোবাইল কোর্টের ব্যাপারে, আইনমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার স্বাক্ষর করেছেন, আশা করছি আজকেই গেজেট হয়ে যাবে। এরপরে কার্যকর করতে আর অসুবিধা নেই।”

“সবাইকে বলবো আইন মেনে চলতে, আমাদের এখন সড়কে উন্নয়নের অভাব নেই, যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের এখন প্রয়োজন শৃঙ্খলা।”

“এখানে যারা রাস্তায় কোন অপরাধ অপকর্ম করবে না তাদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। আমরা ভয়টা দেখাবো যাতে তারা শাস্তির ভয়টা পেয়ে আইন ভঙ্গ করতে নিরুৎসাহিত হয়। সে কারণে আইনের কঠোরতা করা হচ্ছে। গুরুতর শৃঙ্খলা ভঙ্গে যাতে উৎসাহিত না হয়। সে জন্য আইনটা কঠোর করা হচ্ছে।”

শাস্তির পরিমান ধাপে ধাপে হবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “এখানে গায়ে পড়ে কাওকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। এখানে শাস্তির বিষয়ে প্রথমবারেই বড় জরিমানা হয়ে যাবে বিষয়টা তা না। এমনও হতে পারে অপরাধ কম হলে জরিমানাটা এক হাজারটাকা হবে। আবার এটা বারবার করতে গেলে সেখানে জরিমানাটা বাড়বে।"

“এখানে অপরাধ লঘু হলে গুরুদন্ড দেওয়া হবে, এমন বিধান আইনে নেই। তবে এটা কার্যকর করার বিষয়টা খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমি যাত্রী, মালিক, চালকসহ সবাইকে আইন মেনে চলার জন্য অনুরোধ করবো। এই আইনটা আমরা কার্যকর করতে যাচ্ছি ভাল কিছুর জন্য। আমি আশা করি সবাই এটা মেনে নেবেন।"

আগামী ২৪ নভেম্বর বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশকে আইন প্রয়োগের ব্যপারে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা জানিয়ে দিবেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “আইনে কোথাও কোন অসঙ্গতি যদি থাকে, সমাজের কোথাও কোন সমস্যা হলে এটা প্রয়োজনে সংশোধন করা যাবে। আইন তো আর কোরআন-হাদিস-বাইবেল নয়। এখানে আইনটা বাস্তবায়ন করা যাবে না এমন দাবি যারা করেন তারা দেশের জনগণের যে মানসিকতা, দেশের মানুষের যে চাওয়া সেটার সঙ্গে বিরুদ্ধ ও বৈরী আচরণ করছেন।”
“দেশের জনগণ যেটা চায়, এই আইনের কঠোর প্রয়োগ আমরা এই চাহিদা থেকে দূরে সরে যেতে পারি না।”

“আইনটা প্রথমেই হুবহু বাস্তবায়ন হবে বিষয়টা এমন নয়, কিন্তু আস্তে আস্তে হবে, পুলিশকে বলা হয়েছে। ২৪ তারিখে টাস্কফোর্স মিটিংয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে। যাতে আইনের যথাযত প্রয়োগ হয়, এখানে পুলিশ যেন কোন এগ্রেসিভ মোড না নেয়।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশ সফর করে যে সমস্ত চুক্তি করেছেন সেসব বিষয়ে জানতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে বিএনপির চিঠি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি মহাসচিবকে জিঙ্গেস করবো, তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা বিদেশের কোন চুক্তি সংসদে উত্থাপন করেছেন? অথবা সংসদে অনুমোদন নিয়েছে? পার্লামেন্টে কি বিএনপি আমলে কোন চুক্তির অনুমোদন নিয়েছে?

“জোর গলায় বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কোন চুক্তি করবেন না। আর চুক্তি যেটা হয়েছে, এটা পরিস্কার দিবালোকের মত। চুক্তির মধ্যে গোপনীয়তা বলতে কিছু নেই। চুক্তি কি গোপন করে রাখা যায়?”
“তাদের তো অভিযোগই হচ্ছে আওয়ামী লীগ মানে দেশ বিক্রি, গোলামীর চুক্তি, বাংলাদেশ ভারতের হয়ে যাবে, এগুলো তারা বলেই আসছে।”

বিএনপির সঙ্গে শিবিরের সাবেক নেতাদের বৈঠককে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এটা নতুন কিছু না। বিএনপি আর জামায়েতে ইসলাম উপরে যাই বলুক, তলে তলে এদের গলায় গলায় খাতির ।
“এরা একই বৃন্তে দুটি ফুল। একটিকে ছাড়া আরেকটি চলবে না। তারা জমজ ভাইয়ের মতই আছে, কাজেই তাদের বিচ্ছিন্ন ভাবার কোন কারণ নেই। দুটি দলই সাম্প্রদায়িক দল, তাদের মিল সবাই জানে, এটা পরিস্কার।”