প্রতি আসনে আওয়ামী লীগের ১০ প্রার্থী

একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে সারাদেশের প্রায় প্রতিটি আসনে গড়ে ১০ জন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তৎপরতা চালাচ্ছেন। তবে এবার ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন অনেকটাই নির্ভর করবে বিএনপির নির্বাচনে আসা না আসার ওপর। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে তাহলে প্রার্থী তালিকা হবে একরকম আর অংশ না নিলে তালিকা হবে অন্যরকম। দিন শেষে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে প্রায় একশ আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জন্য ‘উন্মুক্ত নির্বাচন’-এর সুযোগ রাখবে দলটি।
দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শক্তিশালী হয়েছেন। অনেকে নিজ নিজ এলাকায় পৃথক বলয় তৈরি করে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশাও করছেন। তাদের অনেকের ধারনা এবারও ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন হবে। তাই দলীয় মনোনয়ন পেলেই নির্বাচনে জয় নিশ্চিত। কিন্তু এবারের নির্বাচন অন্য যে কোনো বারের নির্বাচনে চেয়ে তুলনামূলক কঠিন হবে।
সোমবার জাতিসংঘ সফর থেকে ফিরে গণভবনে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, এবার শক্ত নির্বাচন হবে। সবাইকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী এটা একটা সমস্যা বটে। তবে আমরা মনে করি না এর সমাধান করা যাবে না। অতীতেও বিভিন্ন নির্বাচনে এমনটা হয়েছে, এবারও হচ্ছে। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি আসনে একজনই মনোনয়ন পাবেন। বাকিরা যদি দলের অবাধ্য হয় তা হলে তাদের পরিণতি সুখকর হবে না।’
দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা ভালো। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন দ্বন্দ্ব-সংঘাতে রূপ না নেয় সে জন্য কাজ করছি। ইতোমধ্যে যেসব জেলায় সমস্যা রয়েছে সেসব জেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে কথা বলা হচ্ছে। কিছু কিছু জেলায় আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারাও যাচ্ছেন কোন্দল নিরসনে। আমরা মনে করি, মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে।’
আওয়ামী লীগের দুজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার একটি কথা বলেছেন, ‘শত ফুল ফুটতে দাও’। এর অর্থ এটাই তিনি নিজেও চান প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক যোগ্য প্রার্থী গড়ে উঠুক। সবচেয়ে ভালো যোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দিতে চান তিনি। পাশাপাশি এর আরেকটা সুবিধা হলো, বিএনপি দিনশেষে নির্বাচনে অংশ না নিলে সরকার গঠনের জন্য ১৫১ বা ১৬০টি আসন বাদে বাকি আসনগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। উন্মুক্ত আসনগুলোয় আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একজন নির্বাচিত হয়ে আসবেন। ফলে নির্বাচনটাও জমজমাট হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে পরিচালিত একাধিক জরিপের ভিত্তিতে দলটির প্রার্থী তালিকা মোটামুটি গুছিয়ে আনা হয়েছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিকভাবে দলের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক ডেকে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা দিয়ে ছয় মাস পর পর জরিপ চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। মনোনয়নে প্রাধান্য পাবেন জরিপে এগিয়ে থাকা ব্যক্তিরা।’
আরকেএইচ