ঢাকা সোমবার, ১২ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২


মিডিয়া মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাবনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে কঠোর হওয়ার নির্দেশ রাজশাহী জেলা প্রশাসকের


১২ মে ২০২৫ ১৯:৪২

সংগৃহীত

রাজশাহীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। সোমবার (১২ মে) বেলা ১১টায় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। এ সময় জেলায় অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে এবং ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম ঠেকাতে ‘মিডিয়া মনিটরিং সেল’ গঠন করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। 

 

জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। সভায় সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, ডিজিএফআই ও এনএসআই কর্মকর্তা এবং সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারি দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য। এ সময় মাসিক পর্যালোচনা রিপোর্ট তুলে ধরা হয়। 

 

সভায় কয়েকটি প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, মাদকের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। এক চালান মাদক ধরে অভিযান থামানো যাবে না। আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কোনো দল দেখে কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। ইউএনওরা এলাকায় অপতৎপরতাকারীদের দমনে ব্যবস্থা নেবেন। মোবাইল কোর্টে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মাসে শুধু এক-দুটি নয়, ১০-১৫টি করে মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

 

এ সময় চলমান মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের আইনের আওতায় আনার ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া জেলার চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন আফিয়া আখতার।

 

এদিন উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে কমিটির সদস্যরা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। এ সময় মেট্রোপলিটন পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাফিজুর রহমান বলেন, কার্ড ঝুলিয়ে অনেকে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। কথায় কথায় থানায় এসে বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে। আমরা চাই, মূলধারা সাংবাদিকেদের তালিকা করেন এবং আমাদেরকে দেন। আপনারা সাংবাদিক নেতারা উদ্যোগ নেন, আমরাও উদ্যোগ নিচ্ছি। কারা ভুয়া সাংবাদিক এটা তালিকা করা এবং আইনের আওতায় আনা জরুরি। কারণ এরা মানুষকে, পুলিশকে ও ব্যবসায়ীদের ব্ল্যাকমেইল করছে।

 

সভায় উপস্থিত ছিলেন আইনশৃঙ্খলা কমিটির অন্যতম সদস্য ও ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম জুলু। পুলিশ কর্মকর্তার ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরাও বিব্রত। তবে রাজশাহীর দফতরগুলোতে রাজশাহী প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকতার নামে অপসাংবাদিকতা যারা করছে, তাদের ধরতে ও স্বৈরাচার হাসিনার দোসর পত্রিকাগুলোর ব্যাপারে যাচাই বাছাই করতে মিডিয়া মনিটরিং সেল করে একটি কমিটি করা যেতে পারে।

 

সাংবাদিক জুলু বলেন, এটা জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে হতে পারে। এতে কারা পেশাদার ও কারা অপেশাদার সাংবাদিক এটা যাচাই বাছাই করা যাবে। এরপর অপেশাদার যারাই থাকবে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তাছাড়া এটি নিয়ন্ত্রণ ও রোধ করা কঠিন হবে। এক্ষেত্রে রাজশাহী প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তত আছি। তার এমন প্রস্তাবনার প্রতি সমর্থন জানান আইনশৃঙ্খলা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।

 

এদিন সভায় রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। তিনি বলেন, ‘উনি বিভিন্ন সময়ে নির্ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন, সেজন্য তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’