ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


আওয়ামী লীগ নেতা মানিক মজুমদারের শেষকৃত্যে এগিয়ে আসলেন মুসলিমরা


১৩ এপ্রিল ২০২১ ০১:৫০

ফাইল ছবি

সনাতন ধর্মালম্বীরা মারা গেলে সৎকার কিংবা শেষকৃত্যে সনাতনরাই এগিয়ে আসবেন সবার আগে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এর ব্যাতিক্রম ঘটেছে নরসিংদীর মনোহরদীতে। রবিবার (১১ এপ্রিল) রাতে মনোহরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মানিক মজুমদারের শেষকৃত্যে হিন্দু বা সনাতনদের চেয়ে মুসলিমদের উপস্থিতি ছিলো আনুমানিক পাঁচগুন। এলাকায় গুজব রটে মনিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাই সেই গ্রামের হিন্দুরা এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ পরিবারের।
মানিক মজুমদারের গ্রামের বাড়ি মনোহরদীর গোতাশিয়া ইউনিয়নের আকানগর গ্রামে। তিনি প্রায় পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময় ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

পরিবারের লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায় , মানিক মজুমদার দীর্ঘদিন ধরে ডায়বেটিকস শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। এর মধ্যে গত সপ্তাহে একটি মন্দিরের মিটিং এ মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি।তারপর এলাকাতেই স্থানীয় ডাক্তারের সহায়তায় একটু সুস্থ্য হন। সবশেষ শনিবার দুপুরে উপজেলা সদরে গেলে তার বুকে ব্যাথা অনুভুত হয় এবং এর তীব্রতা বাড়লে পরিবারের লোকেরা তাকে জরুরী ভিত্তিতে ঢাকার উত্তরায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে রবিবার সকাল পর্যন্ত তিনি মোট তিনবার স্ট্রোক করে। পরে রবিবার সকাল ১০.৩০ মিনিটে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। তবে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে বলে পরিবারের পক্ষ্য থেকে নিশ্চিত করেন তার ভাতিজা সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুব্রত মজুমদার তুহিন। তবে গ্রামে লাশ নিয়ে আসলে সনাতন ধর্মের অনেকেই এগিয়ে আসেনি এবং সৎকারে মুসলিমদের উপস্থিতি বেশি ছিল এবং তারা এগিয়ে আসে বলে বক্তব্য পরিবারের।

মানিক মজুমদারের ভাতিজা স্থানীয় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুব্রত মজুমদার তুহিন অভিযোগের সুরে বলেন, আসলে শিক্ষিত মানুষরাও যদি গুজবে কান দেয় তাহলে কষ্ট লাগে। আমাদের অনেক কাছের মানুষ এগিয়ে আসেনি। চার ভাগের তিনভাগই ছিলো মুসলিম একভাগ হিন্দু। গ্রাম অঞ্চলে গুজব বেশি ছড়ায়, করোনায় মারা গেছে এই গুজবের কারনেই বেশকিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক এগিয়ে আসেনি। অথচ আমাদের লাশ সৎকারে হিন্দুদেরই সবার আগে এগিয়ে আসার কথা ছিলো। ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে মুসলিমরা এসেছে এটা ইতিবাচক।