ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


মমতাও বলছেন ‘খেলা হবে’


২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০২:৫৭

সংগৃহিত

নারায়নগঞ্জের সংসদ সদস্য শামিম ওসমানের সেই ‘খেলা হবে’ শ্লোগান উত্তাপ ছড়াচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শক্ত বিরোধী পক্ষ ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা এই শ্লোগানে মজেছেন।

বুধবার হুগলির জনসভায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ‘খেলা হব’ বলে হুঁশিয়ারী দেন। অবশ্য এ সমাবেশে তৃণমূলে যোগ দেন একঝাঁক তারকা। এরা হলেন রাজ চক্রবর্তী, সায়নী ঘোষ, কাঞ্চন মল্লিক, সুদেষ্ণা রায়, মানালি দে, জুন মালিয়া। এর পাশাপাশি যোগ দেন ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারিও। সবাই মঞ্চে বক্তব্য দেয়ার শুরুতে আলোচিত ‘খেলা হবে’শ্লোগান দিয়েই শুরু করেন।

বাংলাদেশের আলোচিত সংসদ সদস্য শামিম ওসমানের এ শ্লোগানে ভালই জমেছে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন।

জানা যায়, শামীম ওসমান প্রায় বছর পাঁচেক আগে নারায়ণগঞ্জের একটি জনসভায় একটি ডেডলাইনকে সামনে রেখে বলছিলেন, "২৪ তারিখের পরে আসো খেলব, খেলা হবে।"

তার এই "খেলা হবে" সংলাপটি তখন মুহূর্তেই দেশের সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। জনপ্রিয় এই উক্তিটি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ব্যাপকহারে ব্যবহার করা শুরু করে।

সম্প্রতি শামীম ওসমানের সেই উক্তি এবার দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ভারতীয় রাজনীতিতে।

রাজনীতির মাঠ কি পাড়া-মহল্লা কিংবা বিয়ের আসর, পশ্চিমবঙ্গে সবার মুখে একটাই কথা “খেলা হবে”।

এর শুরুটা হয়েছিল রাজ্যটির তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মন্ডলের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত স্লোগান “খেলা হবে”র মধ্য দিয়ে।

গত জানুয়ারি মাসে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “খেলা হবে, ভয়ংকর খেলা হবে, এই মাটিতেই খেলা হবে, সেই খেলার রেফারি হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়”।

এরপর মুহূর্তেই নির্বাচনী আমেজ ভর করে পুরো পশ্চিমবঙ্গে। কেবল এই এক স্লোগানের মধ্য দিয়েই জমে ওঠে ২০২১ সালে অনুষ্ঠেয় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রচার-প্রচারণা। যদিও নির্বাচনের দিনক্ষণও এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি।

তবে চুপ করে নেই বিজেপিও। তৃণমূলের “খেলা হবে”র জবাবে দলটি বলছে, “শুধু খেলা হবে না, গুলিও হবে।" আবার খেলার মাঠে লড়াই চলবে, এমন হুঁশিয়ারিও দেওয়া হচ্ছে দলটির পক্ষ থেকে।

এ প্রসঙ্গে বিজেপির যুব মোর্চার পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি শুভম নিয়োগী বলেন, “খেলা হবে কথা তৃণমূলের নয়। বাংলাদেশের এক নেতা সংক্ষিপ্ত আকারে তা বলেছিলেন। সেটা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ব্যবহার করছে। দশ বছর ধরে এ রাজ্যের তৃণমূল যে খেলা খেলেছে তা এবার বন্ধ হবে। এবার বাংলার বাসিন্দারা খেলবেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চুপচাপ বসে সেই খেলা দেখতে হবে।”

এরপর “খেলা হবে” স্লোগানের ব্যাখ্যাও দেন তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “বিজেপির ১১ জনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের সাদা শাড়ি, হাওয়াই চটি পরা মহিলা। মাঠ ওদের, রেফারি ওদের। কিন্তু গ্যালারিতে দর্শকরা হল বাঙলার জনগণ।”

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ৩০০টি আসনের মধ্যে জিতে নেয় ২৯৪টিই। সেসময় বিজেপি পায় মাত্র ৩টি আসন।

তবে, "খেলা হবে" কে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির খেলা যে জমে উঠেছে তা বলাই যাই।