আইপিএল খেলতে না দিয়ে বিবাদে জড়াতে চান না দক্ষিণ আফ্রিকা

বিশ্বকাপ যুদ্ধের দামামা বাজছে। দলগুলো যার যার মতো গুছিয়ে নিয়েছে। ইতিমধ্যে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে।
কিন্তু এদিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট দল দক্ষিণ আফ্রিকা।
ভারতের বিগ বাজেটের আইপিএলে এখনও খেলে যাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের মূল খেলোয়াড়রা।
যে কারণে প্রোটিয়া কোচ ওটিস গিবসন এখনও দলকে নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করতে পারেননি।
গোল ডটকমের খবর, অনেকটা দেরি করে হলেও প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু হবে আগামীকাল থেকে।
তবু এই প্রাক বিশ্বকাপ ক্যাম্পিংয়ে থাকছেন না দলের সেরা তিন খেলোয়াড়। আইপিএলের ফাইনাল খেলতে ভারত ছাড়তে পারছেন না ডি কক, ডু প্লেসি ও তাহির।
এদিকে আইপিএলে খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়ছেন দলটির নির্ভরযোগ্য পারফর্মাররা। এদের মধ্যে বিশ্বকাপ স্কোয়াড সদস্যরাও আছেন।
আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলতে গিয়ে বড় রকমের ইনজুরির পেস আক্রমণে দলের সেরা অস্ত্র কাগিসো রাবাদা।
তার ইনজুরির মাত্রা এতোটাই বেশি যে বিশ্বকাপের আগে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।
দলের আরেক অভিজ্ঞ সেরা পেসার ডেল স্টেইনের অবস্থাও একই। আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে মাঠে নেমে চোট পেয়ে ২২ গজ থেকেই ছিটকে গেছেন ডেল স্টেইন।
চার পেসারের বাকি দুই জন লুঙ্গি এনগিদি ও আনরিখ নর্তিয়ের চোট সারেনি এখনও। যে কারণে নর্তিয়ের বদলে বিশ্বকাপে জায়গা পেয়েছেন অলরাউন্ডার ক্রিস মরিস। আর ক্রিস মরিস এখনও আইপিএলে ঘাম ঝড়াচ্ছেন।
সে হিসাবে বিশ্বকাপে ইংলিশ কন্ডিশনে এমন ইনজুরি ঝড়ে ক্ষত-বিক্ষত পেসার নিয়ে কেমন খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার সেই এখন প্রশ্ন।
এবার আসা যাক রানের বন্যা বইয়ে দেবেন যেসব তারকা তাদের কথা। আইপিএলের কারণে দলের সেরা ব্যাটসম্যানকে কাছেই পাননি প্রোটিয়া কোচ।
আইপিএল নিয়ে বেশ ব্যস্ত দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি, উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি কক, স্পিনার ইমরান তাহির ও ক্রিস মরিস।
মরিসের দল দিল্লি ক্যাপিটালসকে কোয়ালিফাং রাউন্ডে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ডু প্লেসি ও তাহিরের চেন্নাই সুপার কিংস।
ফাইনালে ডি ককের মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে খেলবে তারা।
অথচ আর মাত্র ৮ দিন বাদেই বিশ্বকাপ মিশনে ইংল্যান্ড উড়াল দেবার কথা তাদের।
বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমের খবর, আইপিএল খেলার কারণে দলের এমন সর্বনাশের বিষয়ে আগেই বোর্ডকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কোচ ওটিস গিবসন।
খেলোয়াড়রা যেন আইপিএল থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে আসেন, এ জন্য বোর্ডকে অনুরোধও করেছিলেন তিনি।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড কোচের কথায় কান দেননি।
ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সঙ্গে ঝগড়ায় যেতে চায় না দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড।
এর পেছনে রয়েছে ২০২১-২২ মৌসুমে ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজটি।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত, ভারতের সঙ্গে সিরিজ আয়োজন মানেই মোটা অংকের অর্থ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা।
এখানে রয়েছে একাধিক স্পনসর, বিভিন্ন খাতে মোটা দাগের প্রাইজমানি।
তারা বলছেন, আগামী চার বছরে বেশ লোকসানে পড়তে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড। যার অধিকাংশ এই ভারত সফর থেকে পুষিয়ে নিতে চাইছেন তারা।
আর এ কারণেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কোনোরুপ বিবাদে জড়াতে চাইছেন না তারা।
যে কারণে প্রোটিয়াদের বোর্ডপ্রধান থাবাং মরোয় আইপিএল শেষ না হওয়া অবধি নিজেদের খেলোয়াড় ফিরিয়ে এনে বিসিসিআইয়ের চক্ষুশূল হতে চাননি।
পরে যদি ভারত খেপে গিয়ে তাদের মধ্যকার সিরিজটাই বাতিল করে দেয়? এই ভয়ে।
নতুনসময় / আইআর