নাঈমকে সাহসী বললেন সাকিব

তিনদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম টেস্ট জিতল বাংলাদেশ। ৬৪ রানের এ বিশাল জয়ে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানালেন, ম্যাচের ছোট ছোট মুহূর্তগুলো জেতার জন্যই ফলটা নিজেদের অনুকূলে এসেছে।
প্রথম দিনের শেষ সেশনে ৩ উইকেটে ২১৬ রান নিয়ে চা-বিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। বিকেলের সেই সেশনে পড়েছে আরও ৫ উইকেট। কিন্তু ৯ ও ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে দলকে অলআউট হওয়া থেকে বাঁচিয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। প্রথম দিনের শেষ সেশনে তাদের সেই বীরত্ব সাকিব আল হাসান আজ স্মরণ করিয়ে দিলেন জয়ের পর। নাঈমের সবচেয়ে ভালো যে দিকটা পছন্দ হয়েছে সাকিবের, তার সাহস!
চট্টগ্রাম টেস্টে তৃতীয় দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এক সেশনের বেশি সময় হাতে রেখেই ৬৪ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যত রানে জিতেছে তার চেয়ে ১ রান বেশি তুলেছে তাইজুল-নাঈমের সেই জুটি (৬৫)। অভিষিক্ত নাঈমকে নিয়ে অভিজ্ঞ তাইজুলের সেই জুটি এই টেস্ট জয়ে স্পিনারদের চেয়ে যে কোনো অংশে কম ভূমিকা রাখেনি, তা ফুটে উঠল সাকিবের কণ্ঠে। সঙ্গে অভিষেক টেস্টের অভিষেক ইনিংসেই ৫ উইকেট নেওয়ায় নাঈমের ভূয়সী প্রশংসাও করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘প্রথম ইনিংসে নাঈম ছিল দুর্দান্ত। আর ব্যাট হাতে নাঈম-তাইজুলের ছোট্ট অবদানটুকু তো এক কথায় অসাধারণ। অভিষেক ম্যাচ হিসেবে আমার মনে হয় নাঈম অসাধারণ বোলিং করেছে। আজকে গতকালের তুলনায় উইকেট স্পিনারকে কম সাহায্য করছিল। সেখানে ও এত ভালো বোলিং করেছে। আমি মনে করি ওর খুবই ভালো ভবিষ্যৎ আছে। ওকে তাড়াতাড়ি অনেক কিছু শিখতে হতে পারে, খেলার সঙ্গে সঙ্গে ও সেগুলো শিখবে। সব থেকে ভালো জিনিস মনে হয়েছে, ও অনেক সাহসী।’
নাঈমের সাহসের একটা ছবি তো ভাইরাল হয়ে গেছে। ক্রিজ থেকে অনেক বাইরে দাঁড়িয়ে স্ট্যান্স নিয়েছেন নাঈম, সেটিও আর্মগার্ড ছাড়াই। সাকিব বাহবা দিলেন তাইজুলকেও, 'ওর সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে, নিজের বোলিং নিয়ে ও অসম্ভব রকম পরিশ্রম করে। ও প্রথম ইনিংসে একটা উইকেট পেয়েছে, ওর বোলিংয়ের জন্য আমরা ড্রেসিংরুমে ওর অনেক প্রশংসা করেছি। সবাই বলেছি যে, প্রথম ইনিংসে ও-ই আমাদের সেরা বোলার ছিল, যদিও উইকেট পেয়েছে একটা। অনেক সময় হয় এমন যে, একটা বোলার খুব ভালো বোলিং করছে কিন্তু উইকেট পাচ্ছে না। অন্যদিকে একটা বোলারের একটা-দুইটা উইকেট টেকিং বলে হয়ে গেছে সেটাতেই উইকেট পেয়ে গেছে। আমরা ওই জিনিসগুলো জানি, আমরা ড্রেসিং রুমে ছোট ছোট ব্যাপারের প্রশংসা করি। আমি নিশ্চিত, এটা আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট আর খেলোয়াড়েরা খুব ভালো করে বুঝতে পারে। ও অসাধারণ ভালো বোলিং করছে। আমি চাইব যে, সামনে একটা টেস্ট আছে সেটাতেও যেন ও এভাবেই বল করতে পারে। শুধু এক ইনিংস না, দুই ইনিংসেই যেন পাঁচটা করে উইকেট পায়।'
বোলারদের সামনে অসহায় হয়ে পড়া এই টেস্টে একজন কিন্তু সেঞ্চুরি করেছেন। সাকিব মনে করেন মুমিনুল যোগ্য হিসেবেই জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার, ‘মুমিনুল খুব ভালো খেলেছে। আমরা ছোট ছোট মুহূর্তগুলো জিতেছি। জয়ের (ম্যাচ) জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
আজ তৃতীয় দিনে জয়ের অভিযানে শুরুটা এনে দিয়েছিলেন সাকিব নিজেই। একটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন পর পর দুই ওভারে। আর এর মধ্য দিয়ে টেস্ট ইতিহাসে দ্রুততম অলরাউন্ডার হিসেবে ন্যূনতম ২০০ উইকেট আর ৩০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন সাকিব। এই অর্জনের প্রসঙ্গে সাকিব কিন্তু নিজেকে ভাগ্যবান বলেই মনে করছেন। দলকে সবার আগে রেখে অধিনায়ক বললেন, ‘আমি যা করি সব-ই দলের জন্য। এমন সব অর্জনের জন্য নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। সামনের বছরগুলোয় হয়তো এমন আরও সাফল্য পাব।’
এমএ