ফুটবলের গলি থেকে রাজনীতির রাজপথে

শেষ পর্ব
আমিনুল নিজেকে একজন রাজনৈতিক কর্মী মনে করেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মী হিসাবে আমার প্রথম কাজ হচ্ছে দলকে সুসংগঠিত রাখা। বিএনপি দেশের সাধারণ মানুষের দল। জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্যই আমাদের কাজ করা।
ভবিষ্যতে যাতে কোনো স্বৈরাচারের জন্ম না হয়, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, এ ব্যাপারে আমরা ঐক্যবদ্ধ। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে, যেটা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এদেশের মানুষ চেয়েছিল। আমরা চাই গত ১৭ বছর বিএনপি যে আন্দোলন, সংগ্রাম করে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে গত জুলাই-আগস্টে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা একটি সুন্দর সমৃদ্ধশালী সমাজ রেখে যেতে চাই। সেই সমাজ গড়ার অন্যতম মাধ্যম ক্রীড়াঙ্গন। ক্রীড়াঙ্গনের মাধ্যমে সবাই যেন ঐক্যবদ্ধ থাকে। ক্রীড়াঙ্গন হবে পুরোপুরি দলীয়করণ মুক্ত ও রাজনীতি মুক্ত। হয়তো আমরা একদিনে পারব না, আমাদের সময় দিতে হবে। ১৭ বছরের জঞ্জাল একদিনে সাফ করা যাবে না। সবাইকে নিয়েই আমাদের এগোতে হবে।’
ফুটবলের গলি থেকে রাজনীতির রাজপথে (প্রথম পর্ব)
আমিনুল বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অনেক স্বপ্ন রয়েছে। দু-একটি আমি বলতে চাই। বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত খেলাধুলা হবে বাধ্যতামূলক। বাংলা ও ইংরেজির মতো ক্রীড়াও একটি বিষয় হবে। পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। আমরা একটি সুস্থ জাতি গড়ে তুলতে চাই। স্পেশালাইজড শিক্ষক থাকবেন প্রত্যেকটি ডিসিপ্লিনের। একজন শারীরিক শিক্ষক দিয়ে সব খেলা পরিচালনা করা সম্ভব নয়। স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি করা হবে। সেখান থেকে পাশ করা ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ক্রীড়া শিক্ষক হবেন। বাবা-মা’র প্রতি আবেদন থাকবে, আপনার সন্তান হয়তো জাতীয় দলে খেলতে পারে, না-ও পারে। তবে সুস্থ জাতি হিসাবে গড়ে উঠবে। খেলোয়াড়ের পুষ্টি ও মানসিক বিকাশ যেন ভালোভাবে হয়, সেদিকে নজর রাখা হবে। আমরা প্রতিটি শহরে বিকেএসপির আদলে ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলব। ক্লাবগুলোকে শতভাগ পেশাদারত্বের মধ্যে আনা লক্ষ্য আমাদের।’
তিনি যোগ করেন, ‘যারা বিদেশে খেলে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছে, তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য আমরা ভাতার ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা খেলা ছেড়ে দেওয়া মানে এই নয় যে, দেশ তাকে ভুলে যাবে। দেশ তাকে সব সময় মনে রাখবে। এজন্য তাকে স্থায়ীভাবে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে। পাশাপাশি ভাতাও থাকবে। স্পোর্টস মেডিসিন ও স্পোর্টস ইনজুরির জন্য হাসপাতাল নির্মাণ করব। এখন তো ইনজুরি হলেই খেলোয়াড়রা দেশের বাইরে চলে যায়। অনেকে যেতেও পারে না। আমরা স্পেশালাইজড হাসপাতাল করতে চাই। আমাদের যুব ও তরুণ সমাজের জন্য মাঠ সংরক্ষণ করতে চাই। ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের পাশাপাশি সারা বাংলাদেশের মাঠগুলো সংরক্ষণ করতে চাই। প্রত্যেক বাবা-মা চান, তার সন্তান চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার হবে। তবে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ইচ্ছা পূরণ হলে দেখবেন, প্রত্যেক বাবা-মা চাইবেন তার সন্তান খেলোয়াড় হোক। হয়তো রাতারাতি পারব না। পাঁচ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে। এক্ষেত্রে করপোরেট হাউজগুলোকে কাজে লাগানো হবে।’
(শেষ)