ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৩ই মার্চ ২০২৫, ২৯শে ফাল্গুন ১৪৩১


আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ


১২ মার্চ ২০২৫ ২১:২৪

সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট ও টি২০ থেকে আগেই অবসর নেওয়ায় শুধু ওয়ানডে খেলতেন ৩৯ বছর বয়সী এ ব্যাটার। আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ঘোষণায় ওয়ানডে ক্রিকেটকেও বিদায় বললেন তিনি। তাঁর ওয়ানডে ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার অর্থ হলো- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়া।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফেসবুকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা আমাকে সবসময় সমর্থন করেছেন।’

 

তিনি লিখেছেন, ‘আমার বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি, বিশেষ করে আমার শ্বশুর এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে আমার ভাই এমদাদ উল্লাহকে অনেক ধন্যবাদ, যিনি ছোটবেলা থেকেই আমার কোচ এবং পরামর্শদাতা হিসেবে আমার পাশে থেকেছেন। আমার স্ত্রী এবং সন্তানদের ধন্যবাদ, যারা কঠিন সময়ে আমার পাশে থেকেছেন।’

 

সবশেষে মাহমুদউল্লাহ লিখেছেন, ‘সবকিছু নিখুঁতভাবে শেষ হয় না, কিন্তু তুমি হ্যাঁ বলো এবং এগিয়ে যাও। শান্তি...’

 

আগের দিন মঙ্গলবার জাতীয় দলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিসিবি এ দিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মার্চ মাস থেকে চুক্তিতে না রাখার অনুরোধ করেছেন মিডলঅর্ডার এ ব্যাটার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলায় এ বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাবেন তিনি। ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ায় মুশফিকুর রহিম মার্চ থেকে অবনমিত হবেন ‘বি’ ক্যাটেগরিতে। মাহমুদউল্লাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা না দিলেও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার অর্থ হতে পারে জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকছেন না। 

 

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ইতি টানার আগে সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজাও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। মাশরাফি আনুষ্ঠানিক বিদায় না বললেও তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন গত জানুয়ারিতে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মুশফিক।

 

ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দারুণ ব্যাটিং করেন তিনি। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেঞ্চুরি করেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। টুর্নামেন্টে আট ম্যাচে ব্যাটিং করে নিয়মিত রান করেছেন তিনি। বিশ্বকাপ ছিল ৩৯ বছর বয়সী এ ব্যাটারের ক্যারিয়ারের লাইফলাইন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে রান করে। শেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতে হাফ সেঞ্চুরি (৯৮, ৫০*, ৬২, ৮৪*) করেন মাহমুদউল্লাহ।

 

কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ ম্যাচও খেলেছেন ওয়ানডেতে, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। মাহমুদউল্লাহ টেস্ট ও টি–টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছিলেন আগেই। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে টেস্ট খেলে সাদা পোশাকের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। আর টি–টোয়েন্টি থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর নেন ২০২৪ সালের অক্টোবরে ভারতের বিপক্ষে হায়দরাবাদে খেলে। ২৩৯ ওয়ানডে খেলা মাহমুদউল্লাহ তিন সংস্করণ মিলিয়ে খেলেছেন মোট ৪৩০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। মুশফিক (৪৭০) ও সাকিব আল হাসানের (৪৪৭) পর এটি বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ।