অল্পের জন্য হল না ইমরুল কায়েসের ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। তাতে কি নিজের ৯০ রানেই তিনি জিম্বাবুয়ের বোলারদের যে প্রহার করেছে তাতেই ভক্তরা অনেক দিন মনে রাখার মত শান্তনা পেয়েছে। বাংলাদেশে ব্যাটিং তান্ডবে প্রকারের প্রতিরোধ না করেই খড়কুটোর উড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। মাসাকাজ্জার শান্তনা বাংলাদেশের ৩ ব্যাটসম্যানকে তারা সাজ ঘরে পাঠাতে পেরেছে। মুশফিক রহিম ৪৬ ও মো: মিঠুন ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২৪৭ রান।
সেই লক্ষ্যকে মামুলি করে ৩৬ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জয়ের সাথে সিরিজ জয় করল বাংলাদেশ। লিটন-ইমরুলের ১৪৮ রানে জুটির উপর ভর করে সিরিজ জয়ের ভিত রচনা হয়। লিটন দাস ৭৭ বলে ৮৩ রানের চোখ ধাধানো ইনিংস খেলে আউট হলে মাঠে আসেন ফজলে রাব্বি। কাপাল খারাপ হলে আর কিছু করার থাকে না। প্রথম ম্যাচে শূণ্য রানে ফিরার পরে মাশরাফির অনুরোধে দ্বিতীয় ম্যাচে আবার নিজের যোগ্যতা প্রমানের সুযোগ পান ফলজে রাব্বি।
কিন্তু এবারও সেই শূণ্য রানেই সাজ ঘরে ফিরে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন রাব্বি। শান্তনা এই আগামীতে নিজেকে জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় বলে পরিচয় দিতে পারবেন। লিটন- ইমরুলের ব্যাটিং দৃঢ়তায় জিম্বাবুয়ের প্রতিটি খেলোয়াড় হতাশায় ডুবে যায়। ম্যাচের অর্ধের পর্যন্ত তার ব্যস্ত ছিল বলের পিছু তাড়া করতে। ২৩.৪ বলে লিনট আউট হবার আগে তার ব্যাট থেকে বারো ৪ ও এক ৬ আসে ৮৩ রান। দ্রুত রাব্বি সাজ ঘরে ফিরলে মিস্টার ডিপেন্টেবল মুশফিক রহিম আসে ক্রিজে। অন্যপ্রান্তে সদ্য বাবা হওয়া ইমরুল কায়েস রানের চাকা স্বচল রাখে দলেকে জয়ের বন্দরে পৌচ্ছে দেন। এই সিরিজ জয়ের সাথে সাথে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে পরপর এক ডজন পরাজয় উপহার দিল। এর আগে, টসে জিতে প্রথমে কেন ফিন্ডিং নেওয়া হল এ নিয়ে বেশ সমালোচনা শুরু করেছিল অনেক আলোচক। তারাই প্রথম ইনিংস শেষে মাশরাফির প্রশংসা করেছে। কারন মাত্র ২৪৬ রানে জিম্বাবয়েকে আটকে রেখেছে বাংলাদেশ। ফর্মের তুঙ্গে থাকা বাংলাদেশর জন্য এই লক্ষ্য পার হতে বেগ পাবার কথা নয়।
দলীয় মাত্র ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়েছিল জিম্বাবুয়ে। সে ধারাবাহিকতায় ৭০ রানে তারা হারায় দুই উইকেট। চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শুরুর এই ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেট জুটির দৃঢ়তায় ভালোভাবেই এগিয়ে যায় অতিথি দলটি। একপর্যয়ে মনে হয়েছিল বড় সংগ্রহ গড়তে যাচ্ছে তারা। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে শেষ পর্যন্ত ২৪৬ রানে থামে সফরকারী দলটির ইনিংস। আজ বুধবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ব্রেন্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজার ব্যাটহাতের দৃঢ়তায় বড় সংগ্রহের আশা জাগিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত তা না পারলেও বাংলাদেশের সামনে একটা চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ দাঁড় করাতে পেরেছে তারা। দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা টেইলর এদিন নেমেই বেশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠেন। খেলেন ৭৩ বলে ৭৫ রানের একটি চমৎকার ইনিংস। যাতে নয়টি চারের মার ও একটি ছক্কা রয়েছে।
এরপর ইউলিয়ামস ৪৭ ও সিকান্দার রাজা ৪৯ রানের ইনিংস খেলে দলকে এই সংগ্রহের পথ দেখান। এর আগে ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে (১৪) সাজঘরে ফিরিয়ে শুরুতেই সাফল্য এনে দিয়েছিলেন পেসার সাইফউদ্দিন। এরপর টেইলর ও জুওয়াও জুটি কিছুটা দৃঢ়তা দেখালেও মেহেদী হাসান মিরাজ এই জুটি ভাঙেন। আশা জাগিয়েও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি জুওয়াও (২০)। অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন এদিন বলহাতে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন। ৪৫ রানে তিন উইকেট তুলে নেন তিনি। এ ছাড়া মাশরাফি, মুস্তাফিজ, মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ একটি করে উইকেট পান।
এদিনের ম্যাচের বাংলাদেশ একাদশে নেই কোনো পরিবর্তন। প্রথম ম্যাচে অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান ফজলে রাব্বিকেও এই ম্যাচের একাদশে রাখা হয়েছে। আগের ম্যাচে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। চোটের কারণে কিছুটা শঙ্কা ছিল পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়েও। শেষ পর্যন্ত তাঁকেও একাদশে নেওয়া হয়। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সাইফুদ্দিন।