চাকরি হারালেন ফ্রান্স ফুটবল প্রধান

ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দেশটির বিশ্বকাপজয়ী কোচ দিদিয়ের দেশমের সঙ্গে ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেছে ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু ফরাসি দলটির কোচ হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন দেশটির কিংবদন্তি ফুটবলার জিনেদিন জিদানও। কিন্তু কোচ তো করেননি, উল্টো জিদানকে নিয়ে অসম্মানজনক মন্তব্য করে বসেন ফেডারেশনের সভাপতি নুয়েল লা গ্রায়েত।
ফ্রান্সের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার জিদানকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে প্রবল রেষানলের কবলে পড়েছিলেন ফরাসি ফুটবল প্রধান গ্রায়েত। বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য পরে জিদানের কাছে ক্ষমাও চান তিনি। তবুও নিজের চাকরিটা বাঁচাতে পারলেন না এই ফুটবল প্রধান। ফেডারেশনের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় লা গ্রায়েতকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ভাইস-চেয়ারম্যান ফিলিপ দিয়ালোকে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। ‘বিএফএম টেলিভিশন'র বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
দেশমের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি না করলে জিদান ফ্রান্সের নতুন কোচ হতে পারেন, এমন গুঞ্জন ভেসে বেড়াচ্ছিল বাতাসে। কিন্তু টানা দুটি বিশ্বকাপ ফাইনালে যে কোচ উঠতে পারেন, তার কদর বুঝে দেশমের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছে ফরাসিরা। তবে ফ্রান্সের ফুটবল কিংবদন্তি জিদানকে নিয়ে গ্রায়েতের ন্যাক্করজনক মন্তব্যে বিতর্কের শুরু হয়।
ফ্রান্স ফুটবল প্রধান ‘আরএমসি’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি জানি জিদানকে (কোচ বানানোর ব্যাপার) নিয়ে কথা হচ্ছিল। তার অনেক সমর্থক আছে, কেউ কেউ দেশমের বিদায় চাইছিলেন। কিন্তু কে পারবে দেশমকে তীব্র তিরস্কার করতে? কেউই না।’
১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে একক নৈপুণ্যে ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জেতান জিদান। ২০০০ সালেও তার নৈপুণ্যে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে ফরাসিরা। জিদানকে মনে করা হয় ফরাসি ফুটবলের কিংবদন্তি। অথচ ৮১ বছর বয়সী লা গ্রায়েতের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগও রয়েছে। যদিও তিনি সেটা অস্বীকার করেছেন।
লে গ্রায়েত আরও বলেছিলেন, ‘জিদান ব্রাজিলের কোচ হবেন? তিনি যা খুশি, করতে পারেন। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি কখনও তার সঙ্গে দেখা করিনি। আমরা কখনও দেশমের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের কথা ভাবিনি। তিনি যেখানে চান, যে ক্লাবে ইচ্ছে যেতে পারেন। জিদান কি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন? অবশ্যই না। তিনি ফোন করলে আমি ধরতামও না।’
মূলত জিদানকে নিয়ে অপমানসূচক মন্তব্য করেই গত কয়েকদিনে ভীষণ চাপে পড়েন লা গ্রায়েত। তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন খেলোয়াড় থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদরাও। প্রথমে মুখ খুলেন বর্তমান সময়ে ফ্রান্স জাতীয় দলের সবচেয়ে বড় তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। এরপর ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী আমেলি ওদিয়া কাস্তেরাও গ্রায়েতকে জিদানের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। কিন্তু ক্ষমা চেয়েও শেষ রক্ষা হলো না।
আইকে