পাকিস্তানকে হারাতে টাইগারদের যে পরিকল্পনা

দেশছাড়ার আগে মাশরাফি বেশ জোর গলায় বলেছিলেন এবারের এশিয়া কাপে আমরা শিরোপা জেতার জন্যই যাচ্ছি। আফগানিস্তানের সাথে লড়াকু জয়ে সেই আশা আরো দৃঢ় হয়েছে। এশিয়া কাপের ফাইনালে যেতে টাইগারদের সামনে এখন বাধা পাকিস্তান।
বর্তমান সময়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ। তাছাড়া ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে মাশরাফি বাহিনীর। ভারতের সাথে বড় ব্যবধানে পরাজয়ে পাক শিবিরে রয়েছে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি। আর সেই সাফল্য বয়ে আনতে পারে বাংলাদেশের জন্য। যদিও আরবের এই মাঠকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় হোম ভেন্যু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস এখন সপ্ত আকাশে। সেই উদ্যম সঙ্গী করে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের নিজেদের শেষ এবং ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে আগামীকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের সাথে জিতলেও আগামীকালের অলিখিত সেমিফাইনাল ম্যাচে টাইগার একাদশে আসছে বেশ কিছু পরিবর্তন। এবারের এশিয়া কাপে ব্যাটিং অর্ডারে টাইগারদের অন্যতম সমস্যার নাম ওপেনিং। তামিমের ইনজুরিতে প্রথম ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর কোন ম্যাচেই শুরুটা ভাল করতে পারেনি বাংলাদেশ।
সুযোগ পেয়েও নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন অভিষিক্ত নাজমুল হোসেন শান্ত। পরপর তিন ম্যাচে সুযোগ পেয়েও ভাল করতে পারেননি তিনি। তাই আগামীকালের ম্যাচে তার না থাকাটা অনেকটাই নিশ্চিত।
তার পরিবর্তে একাদশে দেখা যেতে পারে ওপেনার সৌম্য সরকারকে। কেননা সৌম্য কিছুটা অফ ফর্মে থাকলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে তার অতীত রেকর্ড খুবই মজবুত। শেষবারের দেখায় পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলেন হার না মানা ১২৭ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস। সে কারণে আগামীকালের ম্যাচে হয়ত তাকেই আরো একবার ওপেনিংয়ে চাইবেন নির্বাচক এবং অধিনায়ক মাশরাফিও। আর তার সাথে ওপেনিং করবেন দুই বার বর্থ হওয়ার পর আফগানদের সাথে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা লিটন দাস।
ওপেনিং ছাড়াও আসতে পারে মিডল অর্ডারেরও কিছু পরিবর্তন। গত ম্যাচে ওয়ানডাউনে নামা মোহাম্মদ মিথুন প্রথম ম্যাচে ভালো করলেও পর পর দুই ম্যাচে ব্যর্থ রান করতে। তাই তার পরিবর্তে ওয়ানডাউনে দেখা যেতে পারে গত ম্যাচে ৬ নম্বরে নেমে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা ইমরুল কায়েসকে। আর স্লগ ওভারের জন্য মিথুনের পরিবর্তে একাদশে আসতে পারেন আরিফুল হক। ডু অর ডাই ম্যাচে হয়ত ব্যাটিং লাইন আপ মজবুত করতে তাকে একবার সুযোগ দিতে পারেন নির্বাচকরা।
অন্যদিকে বোলিং এ্যাটাকেও একটি পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আফগানদের বিপক্ষে দুই পেসার নিয়ে খেললেও পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন পেসার নিয়েই হয়ত মাঠে নামবে মাশরাফিবাহিনী। সেক্ষেত্রে স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর পরিবর্তে একাদশে আবারো ফিরতে পারেন পেসার রুবেল হোসাইন। তবে এক্ষেত্রে দেখা যেতে পারে এক ম্যাচ খেলা আবু হায়দার রনিকেও।
এছাড়া তেমন কোন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই টাইগার একাদশে। যথারীতি মিডল অর্ডারে খেলবেন সাকিব আল হাসান। মিডল অর্ডারে মুশফিকের সাথে খেলবেন মাহমুদউল্লাহ। আর স্লগ ওভারের খেলার জন্য থাকবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অন্যদিকে ফিনিশিংয়ে আরিফুলের সাথে থাকছেন মিরাজ। পেস এ্যাটাক সামলাবেন মাশরাফি-মোস্তাফিজরা।
অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান এশিয়া কাপে হংকং ও আফগানদের সাথে জিতলেও ভারতের সাথে দুটি ম্যাচেই রীতিমতোই বিধ্বস্ত হয়েছে। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ ওভারে কোনো মতে শোয়েব মালিকের হাত ধরে জয় পায় সরফারাজের দল। ভারতের কাছে এভাবে হেরে আত্নবিশ্বাসের অভাবে ধুঁকছে পাকিস্তান। তবে দেশটির সাবেক ক্রিকেটার ও গতি তারকা শোয়েব আখতারের বিশ্বাস কাল বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনাল খেলবে তার দেশ পাকিস্তান।
তিনি গণমাধ্যমে বলেন ‘আমি এখনও পাকিস্তানকে নিয়ে আশাবাদী যে তারা ফাইনাল খেলবে। দলের এখন যে অবস্থা সবাই তাদের পারফর্মেন্সে অবশ্যই হতাশ হয়েছ।
কিন্তু আমি দলটির পাশে আছি, সরফরাজদের এখন অনেক পরিশ্রম করতে হবে। আমি আশাবাদী তারা ফাইনাল খেলবে।’
এদিকে সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছেন ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী।
বাংলাদেশের দুটি ম্যাচের হতাশাজনক পারফরম্যান্স নিয়ে সৌরভ বলেন, ‘আমার ব্যাপারটা খুবই সাময়িক। একটা খারাপ সময় এসেছে। তারা ভালো খেলবে। দল হিসেবে তারা তো খারাপ নয়। তাই আমি বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখছি’।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সৌম্য সরকার, লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল হক,মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন/ আবু হায়দার রনি।
এমএ