ঢাকা শনিবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৫, ৭ই বৈশাখ ১৪৩২


এশিয়াকাপে টাইগারদের যত রেকর্ড


২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৪০

বাংলাদেশ এশিয়া কাপ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় দিয়েই শুরু করলেও সেই ধারাবাহিকতা মাশরাফিবাহিনী ধরে রাখতে পারেনি। ভারত এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরপর দুই ম্যাচ হেরে নিজেদের আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে ফেলেছিল টিম টাইগার। চূড়ান্ত পর্বে আফগানিস্তানের সাথে নাটকীয় জয়ে সেই হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবার সাথে সাথে বাংলাদেশ এখন শিরোপার অত্যমত দাবিদার। চলতি এশিয়া কাপের মধ্যেই বাংলাদেশের অনেক টাইগার নিজেদের নামের পাশে যোগ করেছে বিশেষ কিছু রেকর্ড। সে তালিকায় মাশরাফি বিন মর্তুজা থাকবেন সবার আগে।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তুলে নিয়েছেন ২৫০তম উইকেট। একটি ব্যক্তিগত মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে চলতি এশিয়া কাপ শুরু করেছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫০ উইকেট থেকে মাত্র ৫টির দূরত্বে ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ২ উইকেট নিয়ে ব্যবধান আরও কমিয়ে আনেন তিনি। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরের ম্যাচেই থেকে যান উইকেটশূন্য, বেড়ে যায় অপেক্ষা। নিজের ছন্দে বোলিং করতে পারেননি ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচেও।

তবে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে সাজঘরে ফিরিয়ে নিজের উইকেটসংখ্যাকে উন্নীত করেন ২৪৮-এ। সুপার ফোরের পরের ম্যাচেই আবারও পেলেন আফগানিস্তানকে। শুরুর দুই স্পেলে করেন ছন্নছাড়া বোলিং; কিন্তু ডেথ ওভারে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফেরান প্রতিপক্ষ অধিনায়ক আসগর আফগানকে। পরে হাশমতউল্লাহ শহিদিকেও সরাসরি বোল্ড করে বিশ্বের ২৫তম ও বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ২৫০ উইকেটের মাইলফলকে নাম লেখান মাশরাফি।

প্রায় ১৭ বছর আগে ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করলেও কয়েক দফায় ইনজুরির কারণে মাশরাফি খেলতে পেরেছেন মাত্র ১৯৪টি ওয়ানডে। তার ক্যারিয়ার থেকে হারিয়ে গেছে অন্তত ১১১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তবু দমে না গিয়ে বারবার মাশরাফি ফিরেছেন বাইশ গজে, এক অদম্য সাহসী যোদ্ধার বেশে। ক্যারিয়ারে ইনজুরির কারণে হওয়া শূন্যস্থানগুলো তিনি পূরণ করেছেন নিজের অর্জনের মাধ্যমেই। সে ধারাবাহিকতায় ১৯৪ ওয়ানডেতে মাত্র ৩১ গড়ে, ওভারপ্রতি ৪.৮০ রান খরচ করেই তুলে নিয়েছেন ২৫০টি উইকেট। দেশের পক্ষে ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটাও তার।

২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ২৬ রান খরচায় নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। যা কিনা এখনো বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিং ফিগার। সে বছরই বিশ্বের সর্বোচ্চ ৪৯টি ওয়ানডে উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি। ক্যারিয়ারে মোট ৮বার চার উইকেট নিলেও পাঁচ উইকেট নিতে পেরেছেন সেই একবারই। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে মাশরাফির ২৫০ উইকেট পূরণ হলেও, বাংলাদেশের হয়ে ২৫০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁতে এখনো এক উইকেট দরকার মাশরাফির। কেননা এশিয়া একাদশের হয়ে খেলতে নেমে আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে একটি উইকেট রয়েছে তার। সেই উইকেটটিই পরিসংখ্যানে তার নামের পাশে যোগ হয়ে রয়েছে।

মাশরাফির সামনে থাকা নামগুলো আরও বেশি অনুপ্রেরণা জোগাবে তাঁকে এগিয়ে যাওয়ার। অনতি দূরেই আছেন কপিল দেব (২৫৩)। খুব বেশি দূরে নেই মাখায়া এনটিনি (২৬৬), জেমস অ্যান্ডারসন (২৬৯), হরভজন সিং (২৬৯), অ্যালান ডোনাল্ড (২৭২), জ্যাক ক্যালিসরা (২৭৩)। আরেকটু জোর কদমে ছুটতে পারলে হয়তো দেখা পাবেন জহির খান (২৮২), সাকলায়েন মুশতাক (২৮৮), এমনকি শেন ওয়ার্নের (২৯৩)।

এদিকে এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫ হাজার রানের অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। ক্যারিয়ারের ১৯০তম ম্যাচে অনন্য এই রানের দেখা পান ৩১ বছর বয়সী এই ডানহাঁতি মিডল অর্ডার। এ ম্যাচের আগে অনন্য উচ্চতার এই রান সংগ্রহে মুশফিকের প্রয়োজন ছিলো মাত্র ৭ রান। ইনিংসের ১১তম ওভারের গুলবাদিন নাইবের ২য় বলটি চার হাঁকিয়ে ৫ হাজারের ঘরে পৌঁছে যান মুশি। এর ফলে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রাহকদের ভেতরে নিজের অবস্থান আরও সুসংহত করলেন মুশফিক। আগে ৪৯৯৩ রান নিয়ে তিনে থাকা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনে। এখনও সেখানেই আছেন। ৫৪৮২ রান নিয়ে দুইয়ে সাকিব আল হাসান। আর ৬৩০৭ রানে শীর্ষে তামিম ইকবাল।

ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের পক্ষে নতুন জুটির রেকর্ড গড়েন মাহামুদুল্লাহ্ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস। চরম বিপদের মধ্যে ১৭ বছরের পুরাতন রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন করে গড়েন মহামূল্যবান ১২৮ রানের জুটি। এই জুটি গড়ার সাথে নিজের ১৪তম অর্ধশতকের সাথে পূরণ করেন ২০০০ রান।

এমএ