ঢাকা শনিবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৫, ৭ই বৈশাখ ১৪৩২


মোস্তাফিজকে কম খেলানোর কারণ জানালেন মাশরাফি


২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৮

ডেথ ওভারে অনেক ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। এমনকি প্রায় নিশ্চিত জয় সেই ম্যাচেও হেরেছে বাংলাদেশ। তার রেকর্ড ভুরি ভুরি। কিন্তু গতকাল (রোববার) এশিয়া কাপের মঞ্চে ডেথ ওভারে অন্য রকম গল্পের জন্ম দিয়েছেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। তার ডেথ ওভারের ক্যারিশম্যাটিক বোলিংয়ে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

কিন্তু এ ম্যাচেই পাঁচ ওভার বোলিং করার পর বল করতেই চাইছিলেন না কাটার মাস্টার। ম্যাচের পর মোস্তাফিজকে প্রেরণা জাগিয়ে বোলিংয়ে পাঠানোর পেছনের গল্প জানালেন অধিনায়ক মাশরাফি।

আবুধাবির প্রচন্ড রোদের মধ্যে টানা চার দিনে তিনটি ম্যাচ। এমন কঠিন সূচিতে এর আগে মুখোমুখি হতে হয়নি বাংলাদেশকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মোস্তাফিজের যখন পাঁচ ওভার শেষ হয় তখন আর পেরে উঠছিলেন না মোস্তাফিজ। ডিহাইড্রেশনে ক্র্যাম্প করতে শুরু করেছে পায়ের পেশি। প্রথম স্পেলের ৩ ওভার করার পর মোস্তাফিজকে সুস্থ রাখতে কিছুক্ষণ বিশ্রামে রাখেন মাশরাফি। কিন্তু তবুও পেরে উঠতে পারছিলেন না কিছুদিন আগে চোট থেকে ফেরা মোস্তাফিজ।

পাঁচ ওভারের পর বল হাতে দৌড়াতে ক্লান্ত মোস্তাফিজের মনও মানছিল না। এর মাঝেই ক্লান্তি কাঠানোর চেষ্টা করেছেন, মাঠে নিজে নিজে স্ট্রেচিং করছেন কিন্তু তার শরীর দিচ্ছিল না। ছুটে গেলেন অধিনায়কের কাছে, জানালেন নিজের ক্লান্তির কথা।

কিন্তু অধিনায়ক তো মোস্তাফিজকে নিয়েই ডেথ ওভারের ছক করে রেখেছেন। তার মধ্যে রুবেল হোসেনও নেই। তাই মোস্তাফিজকে নিয়ে বল করাবেনই অধিনায়ক। মাশরাফি বলেন,‘৫ ওভারের পর থেকেই মোস্তাফিজ বলছিল, ‘ভাই, আমি আর পারব না’। আমার তো মাথায় হাত! আজকে রুবেলও নেই। ম্যাচ তো জিততেই হবে, ওকে আমার লাগবেই। ওর ১০ ওভার তো হিসাব করা আমার। আমি বারবার ওকে বলেছি, পারতেই হবে। বলেছি নিজেকে পুশ করতে। চেষ্টা করেছি ছোট স্পেলে ওকে বোলিং করাতে।

মোস্তাফিজের এফোর্ট নিয়ে ম্যাশ বলেন, ‘ওর কাফ মাসলে টান লাগছিল। এফোর্ট দিতে পারছিল না, ইয়র্কার পারছিলই না শেষ দিকে। আমি বললাম যে, অন্তত রান আপে আস্তে আস্তে দৌড়ে গিয়ে হলেও কাটার দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে। চেষ্টা করেছি সাহস দিতে।’

অধিনায়কের সাহসেই শেষ ওভারে বল হাতে নিলেন মোস্তাফিজ। ম্যাচের শেষ ওভারে জয়ের জন্য আফগানিস্তানের প্রয়োজন আট রান। তাদের হাতে চার উইকেট। দুই দলের খেলোয়াড়দেরই তখন কপালে চিন্তার ভাজ। এমন চাপ নিয়ে বল হাতে আসলেন মোস্তাফিজ। ওভারের প্রথম বল থেকে দুই রান নেন রশীদ খান। দ্বিতীয় বলে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ধরা পড়েন রশীদ খান। তৃতীয় বলে বাই সূত্রে এক রান নেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। চতুর্থ বলটি ডট হয়। পঞ্চম বল থেকে বাই সূত্রে এক রান নেন গুলবদিন নাইব। শেষ বলটি ডট হয়। আর তাতেই এক স্বপ্নময় জয় পায় বাংলাদেশে। বল করাতে না চাওয়া মোস্তাফিজই অধিনায়কের প্রেরণায় হাসি ফোঁটালেন গোটা বাংলাদেশের।

শেষ ওভারের পুরো কৃতিত্ব মোস্তাফিজকে দিয়ে মাশরাফি বলেন,‘আমার কাজ তো ছিল মোস্তাফিজকে স্রেফ বলা, আসল কাজ সে করেছে। এই অবস্থার মধ্যেও যেভাবে বোলিং করেছে, ওকে অবশ্যই কৃতিত্ব দিতেই হবে।’

এমএ