সেনা নিরাপত্তায় সাজেকে আটকা পড়া পর্যটকরা খাগড়াছড়ি পৌঁছেছেন, ফিরছেন নিজ গন্তব্যে

সড়ক অবরোধ ও সহিংস পরিস্থিতির কারণে সাজেকে আটকে পড়া দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় খাগড়াছড়ি শহরে পৌঁছেছেন। এরপর শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন তারা।
এর আগে, শনিবার দুপুরে সাজেকে আটকা পড়া পর্যটকদের সেনাবাহিনীর সহায়তায় খাগড়াছড়ি ফেরত আনতে উদ্যোগ নেয়া হয়। এরমধ্যে জেলা শহরে জুম্ম ছাত্র জনতা ও বাঙালিদের একটি পক্ষের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও পরে সংঘর্ষ বাঁধলে পর্যটকদের দীঘিনালা সেনা জোনে রাখা হয়। বিকেলের পর সংঘর্ষ থামলে পর্যটকদের দীঘিনালা থেকে জেলা সদরের কৃষি গবেষণা এলাকায় রাখা হয়। পরে ধীরে ধীরে শহরের পরিস্থিতির উন্নতি হলে রাতে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্য রওনা দেন তারা। এ সময় পর্যটকবাহী গাড়িগুলোকে নিরাপত্তা দেয় সেনাবাহিনী।
এদিকে, সংঘর্ষের পর জেলা শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, খাগড়াছড়িতো আটকে পড়া পর্যটক ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রামগামী যাত্রীদের বহনকারী বাসগুলোকে একযোগে বিশেষ ব্যবস্থায় রওনা করানো হয়।
এর আগে, শনিবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে খাগড়াছড়ি সদর ও পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ জারি থাকবে বলে জানানো হয়। এছাড়া, ৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
এর আগে, শনিবার সকাল থেকে পাহাড়ে নারী নিপীড়ন বন্ধ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ শুরু করে সমর্থকরা। এতে সাজেকে অবস্থান করা প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকা পড়ে। এছাড়া খাগড়াছড়িতে আটকা পড়ে সাজেকগামী প্রায় হাজারখানেক পর্যটক।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় মারমা স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজক একজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তাকে ৬ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
এই ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গত বুধবার থেকে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ শুরু হয়। একই দাবিতে বৃহস্পতিবার আধাবেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ও শুক্রবারে মহাসমাবেশ করে আন্দোলনরতরা। সেই সমাবেশ থেকে শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিক্ষোভকারীরা।