ঢাকা শনিবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ই আশ্বিন ১৪৩২


চুয়াডাঙ্গায় মিটার চুরি করে মোবাইল নম্বর দিচ্ছে চোর, টাকা পাঠালেই ফেরত


২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০৯

সংগৃহীত

বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করার পর মোবাইল ফোন নম্বর রেখে যাচ্ছে চোর। সেই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে চাওয়া হচ্ছে টাকা। আর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা পাঠালে অনেক ক্ষেত্রে ফেরত মিলছে চুরি যাওয়া মিটার। এমন অভিনব কায়দায় টাকা হাতিয়ে নেয়ার মহোৎসবে মেতেছে চোরচক্র। শুধু চুয়াডাঙ্গার কয়েকটি এলাকা থেকেই প্রায় অর্ধশত থ্রি-ফেজ বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে অভিযোগ জমা পড়েছে, থানায় জিডিও হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে মিটার চুরির সঙ্গে জড়িতরা।

 

গত কয়েক রাতের ব্যবধানে চুয়াডাঙ্গার হাতিকাটা, আলুকদিয়া ও ভালাইপুর এলাকা থেকে প্রায় অর্ধশত থ্রি-ফেজ বৈদ্যুতিক মিটার চুরি গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে মিটার চুরির পর সেখানে ঝুলিয়ে দেয়া হচ্ছে মোবাইল নম্বর। সেই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে, চাওয়া হচ্ছে টাকা। টাকা দিলে তবেই মিলছে চুরি যাওয়া মিটার।

 

স্থানীয়রা জানান, ৪ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়ে চুরির মিটার ফেরত দিচ্ছে চোরচক্রের সদস্যরা। অনেক ভুক্তভোগী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা দিয়ে ফিরে পেয়েছেন নিজের মিটার। অনেকে আবার টাকা দিয়ে রয়েছেন অপেক্ষায়। কেউ আবার টাকা দিয়েও মিটার ফেরত পাচ্ছেন না।

 

একজন ভুক্তভোগী বলেন, মিটার চুরি যাওয়ার পরে বিকাশে ৪ হাজার টাকা পাঠালে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় সেটি ফেরত পাঠায়। ওখান থেকে সংগ্রহ করেছি। অন্য আরেকজন বলেন, আমারও মিটার এভাবেই চুরি হয়েছে। টাকা পাঠালেই কেবল ফেরত দেবে বলছে চোর। এ অঞ্চলের অনেকের সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটেছে।

 

চুরির পর প্রকাশ্যে এভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটলেও মেলেনি সমাধান। বরং দিন দিন এলাকায় চুরির ঘটনা বাড়ছেই। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।

 

স্থানীয় একজন বলেন, চোরের হয়রানিতে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। এক রাতেই ২৩টা মিটার চুরি হয়ে গেছে। অন্য আরেকজন অভিযোগ তুলে বলেন, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কোনো আগ্রহ নেই এই বিষয়ে। সমাধানে কেউ এগিয়ে আসছে না।

 

এদিকে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রাহকদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো অভিনব প্রতারণায় নেমেছে একটি সুনির্দিষ্ট চক্র। মিটার চুরির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে পুলিশ।

 

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জোনাল ও মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, মিটারগুলো নিয়ে তারা কোথাও ব্যবহার করতে পারবে না। এটা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড থেকে সিল করা হয়। সিল ব্রেক করলে ওটা ব্যবহার করতে পারি না, পুনরায় রিসিল করতে হয়। সেক্ষেত্রে তারা ব্যবহার করতে পারবে না, কিন্তু মাঝখানে মুক্তিপণ আদায় করে গ্রাহকদের হয়রানি করছে।

 

চুয়াডাঙ্গার সিআইসি পরিদর্শক মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা বলেন, জেলার পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। অতিদ্রুত তাদেরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

 

শুধু চুয়াডাঙ্গায় নয়, মেহেরপুরের বারাদি, আমঝুপি ও চাঁদবিল এলাকাতেও ঘটছে এমন চুরির ঘটনা।