১০০ শিক্ষার্থী পরিবারে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের মানবিক সহায়তা

হোসাইন শেখ। পেশায় রিকশাচালক। ফরিদপুর শহরের আলীপুরের বাসিন্দা। দু সন্তানের জনক। স্বামী-স্ত্রী মিলে সংসারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। স্বল্প উপার্জন। কিন্তু পড়ালেখার প্রতি অদম্য বাসনা। নিজে পারেননি, তাই মেয়েকে পড়াতে চান। সেজন্য শহরের আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। এতদিন ভালোই পড়ালেখা চলচিল। স্বল্প উর্পাজনেও খুব একটা আর্থিক সমস্যা হয়নি। কিন্তু চলমান করোনা দুর্যোগে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার চালানোই কষ্টকর, সেখানে সন্তানের পড়লেখা খুবই কষ্টসাধ্য।
যতোই কষ্ট হোক, সন্তানের পড়ালেখা বন্ধ করতে চান না হোসাইন শেখ। কোথায় সাহায্য পাওয়া যাবে। ভাবতে ভাবতে কি মনে করে একদিন চলে আসেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের কাছে, অভাবের কথা খুলে বলেন।
একজন জেলা প্রশাসককে বর্তমান করোনাময় সময়ে নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি গুরুত্বানুসারে নানা ক্ষেত্রে ভাবতে হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত। একজন অভিভাবক সহায়তার জন্য এলেও এরকম অসংখ্য অভিভাবক রয়েছেন, যারা মুখ ফুটে বলতে পারেন না। তাই তিনি কালবিলম্ব না করে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল সকল শিক্ষার্থী পরিবারের তালিকা করলেন। শিক্ষার্থী পরিবারপ্রতি তার পক্ষ থেকে তুলে দেয়া হল মানবিক সহায়তা।
বুধবার (২০ মে) আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চত্ত্বরে ১০০ জন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী পরিবারের মাঝে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের পক্ষ থেকে এ মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়।
বিদ্যালয় মাঠে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ জয়নুল আবেদিন। উপস্থিত ছিলেন জেলা নাজির মো. মোখলেছুর রহমান মুন্সী এবং বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষকরা।
খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে ছিল পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, এক লিটার তেল, এক কেজি চিনি, এক কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি চিনি, এক প্যাকেট শেমাই ও প্যাকেট দুধ।
মানবিক সহায়তা পেয়ে অভিভাবক হোসাইন শেখ বলেন, ‘এ সহায়তা পেয়ে আমাদের খুব উপকার হলো। এজন্য পোলাপানের পড়ালেহায় উপকার অবি। ওদের জন্নি কিছু খরচ করতি এহন আর সমস্যা অবি ন্যা।’
নতুন সময়/এআর