ঢাকা সোমবার, ১২ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২


কারাগারে আইনজীবীকে পুড়িয়ে হত্যা, বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ


৯ মে ২০১৯ ০১:৩০

পঞ্চগড় জেলা কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় বার কাউন্সিলের তালিকাভূক্ত আইনজীবী পলাশ কুমার রায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৮ মে) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে একজন বিচারিক হাকিমকে দিয়ে এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্ত করার সময় বিচারিক হাকিমকে (ম্যাজিস্ট্রেট) পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক, জেল সুপার ও পুলিশ সুপারকে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৩ জুন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান।

এর আগে গত ৬ মে পঞ্চগড় জেলা কারাগারে (কারা হেফাজতে) থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত আইনজীবী পলাশ কুমার রায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে স্বরাষ্ট সচিব, আইজি প্রিজন, পঞ্চগড় কারা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টেদের বিবাদী করা হয়।

গত ৫ মে পলাশ কুমার রায়কে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ মার্চ দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে তার বিরুদ্ধে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের করা মামলা প্রত্যাহার দাবিতে পরিবারের লোকজন নিয়ে অনশন শুরু করেন পলাশ কুমার রায়। পরে সেখান থেকে উঠে তারা জেলা শহরের শের-ই-বাংলা পার্ক সংলগ্ন মহাসড়কে এসে মানববন্ধন শুরু করেন। এসময় রাস্তা বন্ধ করে প্রধানমন্ত্রী, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে অশালীন ও কটূক্তির অভিযোগে স্থানীয়রা তাকে সদর থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন।

এদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করার অভিযোগে স্থানীয় রাজিব রানা নামের এক যুবক তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। ওই দিনই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আইনজীবী পলাশকে গত ২৬ এপ্রিল বিকেলে ঢাকায় পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু সকালে হঠাৎ হাসপাতালের বাইরে থাকা একটি টয়লেট থেকে সে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দৌঁড়ে বের হয়। এ সময় কারারক্ষীরা তাকে উদ্ধার করে এবং শরীরের আগুন নেভান। আগুনে তার শরীরের ৪৭ শতাংশ পুড়ে যায়। রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরদিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নতুনসময়/আইকে