ঢাকা মঙ্গলবার, ১৩ই মে ২০২৫, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩২

গাইবান্ধায় পানিবন্দি ২০ হাজার পরিবার


৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:১৭

ছবি: সংগৃহীত

উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর টানা ভারি বৃষ্টিপাতে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় যমুনা নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির কারণে থানার পূর্ব পাশের পয়েন্টের পানি বিপৎসীমা ছুঁই-ছুঁই করছে। এতে করে একটি গ্রামীণ বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বাংশের সমস্ত এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, গত ৫ দিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল নেমে আসায় উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বাংশ প্লাবিত হয়েছে। ভরতখালী ইউনিয়নের শ্বশান ঘাট এলাকয় বাঁধ ভেঙে বরমতাইড়, উত্তর উল্যা ও দক্ষিণ উল্যা এলাকার লোকালয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া হলদিয়া, ঘুড়িদহ ও জুমারবাড়ী ইউনিয়নে ১৫টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি কৃষকের জমির পাট, কাউন, তীল ও শাকসবজিসহ বর্ষাকালীন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। লোকজন পরিবারের শিশু, বয়ষ্ক লোক ও গবাদি পশু-পাখি নিয়ে নিয়ে বিপাকে পড়েছে। এসব মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের চিনিরপটল, খামার পবনতাইড়, হলদিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, বেড়া, গাড়ামারা, দীঘলকান্দি, পাতিলবাড়ী, গুয়াাবাডী, কালুরপাড়া, কানাইপাড়া, কুমারপাড়া এবং জুমারবাড়ী ইউনিয়নের কাঠুর, থৈকরের পাড়া ও পূর্ব আমদির পাড়াসহ কমপক্ষে ১৫টি মৌজা প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকার কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বন্যার পানিতে প্লাবিত এসব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। লোকজন গবাদি পশু-পাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এসব এলাকার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা বেকার হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের মধ্যে খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মানুষের পাশাপাশি গো-খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন গবাদি পশুর মালিকেরা।

সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, সাঘাটা ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব পানিবন্দি মানুষ এবং গো-খাদ্যের সঙ্কটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। জরুরিভাবে এসব এলাকায় বন্যার্ত মানুষের জন্য খাবার এবং গো-খাদ্য ব্যবস্থা করা দরকার।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, টানা বৃষ্টিতে জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নিম্নাঞ্চলগুলোতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি প্রবেশ করেছে।

সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, বন্যার পানি আসতে শুরু হয়েছে জেনে নৌকাযোগে বন্যা কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্ব ন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি দিয়েছি। এখন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বন্যা কবলিত মানুষের সংখ্যা নিরুপন করা হবে।