জাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন শুরু হয়েছে। এতে ছাত্রদল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), ইসলামী ছাত্রশিবির, বামপন্থি সংগঠন, স্বতন্ত্রসহ আট প্যানেলে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা ভোট করছেন। এবারের নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৮৯৭ জন ভোটার রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এ লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জাকসু নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সার্বিক দিক তুলে ধরে ব্রিফ করেন মঙ্গলবার।
জাকসুর প্রধান নির্বাচন মোট ভোটার ১১ হাজার ৮৯৭ জন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে প্রায় ৫৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ১০২ জন। ফলে মোট প্রার্থীর সংখ্যা কমেছে। ২১টি হলে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রদের ১১টি এবং ছাত্রীদের ১০টি হলে রয়েছে ভোটকেন্দ্র। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ২১টি হলে ২১ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন পোলিং অফিসার এবং ৬৭ জন পোলিং অফিসার সহায়ক হিসাবে কাজ করবেন। এছাড়া প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। এই নির্বাচনে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসাবে ভোটকেন্দ্র সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। নিরাপত্তা জোরদার করতে ১২০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এছাড়া বিশেষ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে বলে জানান নির্বাচন কমিশন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস)সহ ২৫টি পদে চূড়ান্ত ভোট পরীক্ষায় রয়েছেন ১৭৭ জন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), বামপন্থি সংগঠন ও স্বতন্ত্রসহ আটটি প্যানেলের মধ্যে এ লড়াই হবে আজ বৃহস্পতিবার। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাগছাস, ছাত্রদল, বামপন্থি’ সংগঠনের একাংশ বিভিন্ন নামে চারটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল রয়েছে। অন্যরা আংশিক প্যানেলে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা করা হবে। এ নির্বাচনে ১৭৯ জন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। তবে ভিপি পদে একজনের প্রার্থিতা বাতিল ও জিএস পদে একজন সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। সেই হিসাবে জাকসুতে মোট ১৭৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বর্তমানে সহসভাপতি (ভিপি) পদে নয়জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নয়জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস-নারী) পদে ছয়জন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস-পুরুষ) পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নিয়মিত ছাত্রত্ব না থাকায় প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের একাংশ মনোনীত সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে ছাত্রদলের প্যানেলে জায়গা না পেয়ে প্যানেল ঘোষণার দিন বিদ্রোহ করে জিএস পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া। তবে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও ব্যালটে তার নাম থাকছে।
জাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে লড়ছেন-আরিফ উল্লাহ আদিব, মো. শেখ সাদী হাসান, রাব্বি হোসেন, আরিফুজ্জামান উজ্জল, আব্দুর রশিদ জিতু, সোহানুর রহমান, রাব্বি হোসেন, আব্দুল মান্নান ও মাহফুজুল ইসলাম মেঘ। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়ছেন-আবু রায়হান কবির রাসেল, মাজহারুল ইসলাম, তানজিলা হোসাইন বৈশাখী, মো. শাকিল আলী, জাহিদুল ইসলাম, আবু তৌহিদ মো. সিয়াম, শরন এহসান ও মো. তানবীর হোসেন। নারী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে লড়ছেন আয়েশা সিদ্দিকা, আঞ্জুমান আরা ইকরা, লামিয়া রহমান তৈশী, ফারিয়া জামান, মালিহা নামলাহ্ ও সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস। পুরুষ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে লড়ছেন-রাকিবুল হক, ফেরদৌস আল হাসান, সজিব আহম্মদ, আল ইমরান, জিয়া উদ্দিন, সাজ্জাদউল ইসলাম, কাউসার আলম আরমান, নাজমুল ইসলাম, নূর এ তামীম স্রোত ও তৌহিদুল ইসলাম ভূঁঞা।