উত্তরায় উবার চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে উবার চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম আরমান। উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ৫২ নম্বর বাড়ির সামনে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দিনগত মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে নিহতের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহত ওই উবার চালক পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানাধীন ফতে মোপুরের মৃত আব্দুল আব্দুল হাকিমের ছেলে। সে ঢাকায় মিরপুর ১১ নম্বর এলাকার ১১-১২ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর লেনের ১৬ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকত।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরির্দশ (এসআই) মুশফিকুর রহমান বলেন, উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ৫২ নম্বর বাড়ির সামনে কে বা কারা গাড়ীর ভেতর এক জনকে গলা কেটে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।
জানা যায়, উবারে চালিত গাড়ীটি মিরপুর ১১ নম্বরের ৬ নম্বর লেনের ১২ নম্বর সড়কের এক উবার গাড়ী ব্যবসায়ীর গাড়িটি। তার ৭টি প্রাইভেটকার রয়েছে। সবগুলোই উবারে ভাড়া দেওয়া। এদিকে গাড়ীর মালিকের ছোট ভাই অন্তর জানান, রামপুরার ইষ্ট ওয়েষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে রাত ১১টা ২১ মিনিটে উবারে কল পেয়ে যাত্রী নিয়ে উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরে আসেন চালক আরমান। সেখানে ১২টা ০৪ মিনিটে তার টিপ শেষ করার কথা ছিল। আর টিপ শেষ করেই মিরপুরে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাত ১টার বেশী বেজে গেলেও সে না ফিরে আসাতে আমি তাকে কল দিলে অন্য একজন ফোন রিসিভ করে এবং জানান তার দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পরবর্তীতে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আরমানের গলা কাটা। আর তার লাশ গাড়ীর ভেতর পড়ে রয়েছে। অন্তর আরো বলেন, আরমান প্রায় এক বছর যাবৎ আমাদের গাড়ী চালাতেন।
এদিকে আরমানের স্বজনরা জানান, আজ (শুক্রবার) নারায়ণগঞ্জে তার ছোট বোনের বিয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদ হয়েছে। গতকাল রাতেই গাড়ী মালিকের কাছে বুঝিয়ে সেখানে যাবার কথা ছিল। কিন্তু রাতের আধারেই কে বা কারা তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে গেছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ২টায় দেখা যায়, ঢাকা মেট্রো গ ২৫-৪৫৪৫ নম্বরের একটি এ্যালিয়ন গাড়ী স্টার্ট করা অবস্থায় রয়েছে। গাড়ীর সামনের দুটি হেড লাইট জ্বলছিল। আর ভেতরে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে আরমানের লাশ। তার গলার ডান পাশে কাটা দাগের চিহ্ন রয়েছে। অপরদিকে আরমানের কোমড়ের বেল্ট বাধা ছিল। ভোর ৪টা পর্যন্ত গাড়ীটি স্টার্ট অবস্থায় থাকার পর বন্ধ হয়।
এদিকে ঘটনাস্থলে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল,উত্তরা জোনের এসি (সহকারী কমিশনার) শচিন মৌলিকসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তারা এ প্রসঙ্গে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
পরবর্তীতে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এসে ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে। সিআইডির আলামত সংগ্রহ শেষে নিহতের লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হবে বলে জানায় পুলিশের একটি সূত্র।
এদিকে ওই সূত্রটি বলছে, তাকে গলা কেটেই হত্যা করা হয়েছে। আর গাড়ী ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই আরমানকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অপরদিকে আরমানের স্বজনরাও বলছেন, তাদের কোন পূর্ব শত্রু ছিল না, যে কারণে তাকে খুন করা হতে পারে। গাড়ী ছিনতাইকারী উবারের যাত্রী সেজে গাড়ী ছিনতাই করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু তারা গাড়ী ছিনতাই করতে না পেরে আরমানকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।