ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১লা আশ্বিন ১৪৩২


টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনঃ ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের এমপি ও মন্ত্রীদের সঙ্গে আঁতাতকারী এখন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী


১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:০৩

সংগৃহিত

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন(স্বপন ফকির) এর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল ২ (ভুয়াপুর-গোপালপুর) এর আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছোট মনির-কে সংবর্ধনা প্রদান করার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এছাড়া বিগত ১৭ বছরে পতিত ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের এমপি ও মন্ত্রীদের সঙ্গে আঁতাত করে চলায় তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা-মোকদ্দমা হয়নি। এর পরেও তিনি বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য । তার প্রভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মামলা ও হামলার শিকার ত্যাগী বিএনপি নেতারা কোণঠাসা।

মধুপুর-ধনবাড়ী এলাকাবাসী অভিযোগ করেন যে স্বপন ফকির শহরজুড়ে শেখ মুজিব ও আওয়ামী নেতাদের পাশে নিজের ছবি দিয়ে ব্যানার ও ফেস্টুন লাগিয়ে আওয়ামী লীগপন্থী হিসাবে নিজকে ১৭ বছর নিরাপদ রেখেছিল।


৫ আগস্ট এর পর স্বপন ফকির আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মী যারা বিগত ১৭ বছর বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলা হামলা নির্যাতন করেছে তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার অভিযোগ ইতিমধ্যেই বিএনপির হাই কমান্ডকে পাঠিয়েছে এলাকাবাসী।


স্বপন ফকিরের টাঙ্গাইল- ২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক প্রভাবশালী এমপি ছোট মনির পাশে বসে হাজার হাজার জনতার মাঝে এক ভিডিও তে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ও তার ফ্যাসিস্ট পুলিশ কে ধন্যবাদ দিতে দেওয়ার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।


গত ১৭ বছর টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের সাথে আঁতাত করে জামাই আদরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে স্বপন ফকির । তার বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের ডামি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযাগ রয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফি উদ্দিন মনির পরিবারের দায়িত্ব নেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির সরকার। শফি উদ্দিন মনি'র মেয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় জাকির সরকারকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন স্বপন ফকির যিনি বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। ২০২৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার ভাই মজিদ সরকার অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কেন্দ্র কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। জাকির সরকার কাকরাইদের সরকার বাড়িতে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলীর পক্ষে উঠান বৈঠক করেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।


ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আজিজ ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে এবং সাবেক এমপি ও মন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ধন্যবাদ জানান এবং তার সাথে আঁতাত করেই তিনি তার শিক্ষকতার পদ আগলে রাখেন। এই জাকির সরকার এবং অধ্যক্ষ আজিজ এখন স্বপন ফকিরের এলাকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত।


পৌর বিএনপির সভাপতি খুররম খান ইউসুফজী প্রিন্স ২০১১ সালে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও এমপি আব্দুর রাজ্জাককে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে ৭৫০ জন বিএনপি নেতা কর্মীর নামে মামলায় সহযোগিতা করেন । এই প্রিন্সও এখন স্বপন ফকির এর প্রধান সিপাহী হিসাবে রয়েছে।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায় স্বপন ফকির গত বছরের ৫ আগস্টের পর এলাকায় এসে তিনি রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন। বিগত সরকারের ডামি নির্বাচনে স্বপন ফকির বিএনপির সদস্য হলেও আওয়ামী লীগের হয়ে গত তিনটি নির্বাচনে করে পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে।
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা বিএনপির বিরাজমান চার গ্রুপের মধ্যে তিনটি গ্রুপ পাল্টাপাল্টি আলাদা বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দ মিছিল করছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোবাইর আল মাহমুদ রিজভীর নেতৃত্বে আনন্দ মিছিল বের হয়। লে. কর্নেল (অব.) আসাদুল ইসলাম আজাদের ‘কর্নেল আজাদ সমর্থক গোষ্ঠী’র ব্যানারে আনন্দ মিছিল বের হয়। এতে মূলদল বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা অংশ নেন । কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য স্বপন ফকির গ্রুপও মিছিল করেন, তার সাথে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনসহ পৌর বিএনপির কয়েকজন নেতা কর্মী। এসব বিভাজন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রভাব দেখা গেছে।


কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য স্বপন ফকিরের বিরুদ্ধে জনপ্রিয় বিএনপি নেতাদের নিয়ে নানা অপপ্রচার শুরু করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।