হাত-পা নাড়াতে পারছেন না খালেদা

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ। তিনি হাত-পা নাড়াতে পারেন না, হাঁটাচলা করতে তার মারাত্মক অসুবিধা হয়। চিকিৎসক’রা বলেছেন-তার বাম হাত ও পা প্রায় অবশ হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, গুরুতর অসুস্থতার কারণে আদালতে যেতে পারবেন না, বেগম জিয়া সেকথাটিই বলেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ জোর করে আদালতকে ব্যবহার করে বিচারকার্য ছাড়াই রায় দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।
শুক্রবার (১৪সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ তিনি এসব কথা বলেন ।
রিজভী বলেন, অসাংবিধানিক ভাবে কারাগারে আদালত বসিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মামলার রায় চায় রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে বলেছে ‘যেহেতু খালেদা জিয়া আদালতে আসতে চাচ্ছেন না, তাই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রায় ঘোষনার দিন ধার্য করুন’। আদালতের কার্যক্রম শেষ করতে লিখিত আবেদনও দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রের অবৈধ কর্তৃপক্ষ আওয়ামী সরকার চক্রান্তমূলকভাবেই দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে সাজা দিয়েছে সেটি আবারও প্রমান করলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
এটি সম্পূর্ণরুপে ন্যায় বিচারের পরিপন্থী, অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। প্রতিহিংসার বিচার চরিতার্থ করতেই তাড়াহুড়ো করার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষের এই চাপ সরকারের নির্দেশেই হচ্ছে।
তিনি বলেন, পোলিও টিকা খাওয়ানোর একটি শ্লোগান আমরা অনেকদিন যাবৎ শুনে এসেছি ‘বাদ যাবে না একটি শিশু’। এখন সরকার এই শ্লোগানটি ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ করছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর। অর্থাৎ ‘মামলা-হামলায় বাদ যাবে না একটিও বিএনপি নেতাকর্মী’। দেশে এখন মানুষ নিজের ছায়াকেও ভয় পাচ্ছে। মনে হয়-দেশের প্রতিটি মানুষকে কেউ না কেউ অনুসরণ করছে, গতিবিধি লক্ষ্য করা হচ্ছে।
এমনিতে গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের ক্রমাগত বিস্তৃতি ঘটছে, তার ওপর রাজধানীসহ দেশের আনাচে কানাচে এমন কোন বিএনপিসহ বিরোধী দলের মানুষ বা সমর্থক নেই যাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়নি। পাশাপাশি বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের ছাঁকনি দিয়ে ধরা হচ্ছে। জনগণকে পুলিশের নিরাপত্তা দেয়ার কথা অথচ নিত্যদিনের পুলিশের আগ্রাসী অভিযানে দেশের মানুষের জানমাল নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, মতিঝিল থানায় বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আমিনুল হক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এবং আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া এবং পল্টন থানার একটি মামলায় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালামসহ অসংখ্য নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি দলের পক্ষ থেকে এই অসত্য ও বানোয়াট মামলা দায়েরের করা হয়েছে।
এছাড়া গতকাল দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ জনাব তরিকুল ইসলাম, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী বিষয়ক সম্পাদক এম এ মালেক, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নায়ক উজ্জল, জাসাস সাধারণ সম্পাদক নায়ক হেলাল খান, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুলতানা আহমেদসহ বহু নেতৃবৃন্দের বাসায় পুলিশ হানা দেয় এবং তল্লাশীর নামে ব্যাপক তান্ডব চালায়।
দেশের বিশিষ্ট ও জাতীয় রাজনীতিবিদদের বাসভবনে পুলিশ কর্তৃক তল্লাশীর নামে এই ন্যাক্কারজনক তান্ডবের ঘটনায় আমি দলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আইএমটি