‘জামায়াত’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ’ নিয়ে কামালের মন্তব্য

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছিলাম। তারা (জামায়াত ইসলামীর সমর্থকরা) অন্য চিন্তা করেছে। তারা স্বাধীনতাবিরোধী কাজ করেছেন। দল হিসেবে করেছে তারা। এটা তো বলা যায় না যে ব্যক্তি হিসেবে করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘জামায়াত নিয়ে আমি যতদূর জানি। ওই দল থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কারা ছিলেন তা জানতে পারলে আমাদের কাজে লাগবে’
এ দেশের রাজনীতিতে ড. কামাল হোসেন ও তার দল গণফোরাম এবং সম্প্রতি আলোচিত হয়ে উঠেছেন বিএনপির জাতীয় ঐক্য গড়ার চেষ্টার কারণে। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতার দলকেও কাছে টানতে চায় বিএনপি। তবে কামাল হোসেন শর্ত দিয়েছেন স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামী যে জোটে আছে, সেখানে তিনি যাবেন না।
এর মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় ঐক্যের আলোচনা অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আবার বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে বিএনপির এক কর্মসূচিতে জামায়াতের প্রতিনিধি এসে ঘোষণা দিয়েছেন, তারা বিএনপির পাশে আছেন, থাকবেন।
ফলে কামাল হোসেনকে জোটে নিতে বিএনপি তার দেড় যুগের মিত্র জামায়াতকে বাদ দেবে কিনা এমন ধোঁয়াশাও তৈরি হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যখন এই দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ভারী অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন আক্রান্ত দেশবাসীর পক্ষে না দাড়িয়ে আক্রমণকারীর পাশে দাঁড়ায় জামায়াত ইসলাম পাকিস্তান। সেসময় রেডিওতে দেয়া এক ভাষণে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির গোলাম আযম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পাশে থাকার উদাত্ত আহ্বান জানান।
এরপর ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে নিয়ে গোলাম আযম প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খানের সঙ্গে পরামর্শ করেন। বুদ্ধি দেন বাঙালি নিধনের। আর জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নিয়ে গঠন করা হয় রাজাকার বাহিনী। এই দলের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ গড়ে তোলে খুনি বাহিনী আলবদর, যারা জড়িত ছিল বুদ্ধিজীবী হত্যায়।
পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার দায়ে মুক্তিযুদ্ধের পর নিষিদ্ধ করা হয় জামায়াতকে। পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। পাকিস্তানি পাসপোর্টে দেশে আসার সুযোগ পান গোলাম আযম, ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও তিনি দেশ ছাড়েননি। পরে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি নাগরিকত্বও পান।
১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত ও বিএনপি আসনভিত্তিক সমঝোতা গড়ে তোলে। আর ১৯৯৯ সালে জোটবদ্ধ হয় দুই দল। ২০০১ সালে এই জোট ক্ষমতায় আসার পর আলবদর বাহিনীর দুই নেতা মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ হন মন্ত্রী।
এমএ