ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


স্বাস্থ্য খাতে সরকারের কোনো নজর নেই : রিজভী


২১ মে ২০২০ ২২:৪০

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দেই সরকারের অবহেলা প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার সকালে দলীয় এক ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই যে বিশ্বব্যাপী মহামারীর কবলে গোটা বাংলাদেশ আজকে যে ভয়াবহ অবস্থা এখানে সরকারের অগ্রাধিকার যে খাত সেই খাতের মধ্যে ৭ নাম্বারে রাখা হয়েছে স্বাস্থ্যখাতকে। গতবছর ছিলো ১০ হাজার কোটি টাকা, এই বছর রাখা হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকার একটু বেশি। অর্থাৎ এখনো এই স্বাস্থ্যখাতের ব্যাপারে সরকারের কোনো নজর নেই।

এডিপিতে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্ধ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, সাংবাদিকরা পরিকল্পনামন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেছিলো, এই যে মহামারি হাসপাতালে যন্ত্রপাতি নাই, স্বাস্থ্য সেবা নাই- এখানে স্বাস্থ্যখাত সরকারের অগ্রাধিকার এতো নিচে কেনো? পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন যে, আমরা টাকা বাড়ালে সেটা বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই। তাহলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত, বাংলাদেশের মেডিকেল হাসপাতাল, বাংলাদেশের সব কিছু অক্ষম তারা চালাচ্ছে এবং এই সরকারের কারণেই অক্ষমদের হাতে আছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত। এরকম পরিস্থিতি চলতে পারে না।

গত ১৯ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) ভার্চুয়াল সভায় আগামী অর্থবছরের এডিপির চূড়ান্ত দেয়া দেয়া হয়। এই এডিপিতে ২০২০-২১ অর্থবছরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেখানে স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা।

স্বাস্থ্যখাতে সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা খুব উষ্মা প্রকাশ করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা দায়িত্ব নিয়ে কথা বলি না, তথ্যমন্ত্রী প্রতি সময়ে বিষোদ্গার করছেন। কই আপনারা তো কোনো কিছুর সমাধান করতে পারেননি। আজকে হাসপাতালে ভেন্টিলেটর নেই, অক্সিজেনের সিলিন্ডার নেই, যে যন্ত্র অক্সিজেন দেবে সেই যন্ত্র নেই। যে অক্সিজেন মাস্ক লাগে সেই মাস্ক ৪০ শতাংশ হাসপাতালে নাই। এগুলো কী ব্যর্থতা নয়?

তিনি বলেন, এই ব্যর্থতার কারণেই তো করোনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। এই ব্যর্থতা তো সরকারের। এই ব্যর্থতার সমালোচনা করলেই তারা (সরকার) খুব মন খারাপ করেন, তারা রাগান্বিত হন। যারা এসব বিষয় নিয়ে ফেসবুকে লেখেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে, গ্রেফতার করে। কালকে গাজীপুরে পলাশ নামে একটি ছেলে ফেসবুকে লেখার কারণে বলে তাকে গ্রেফতর করা হয়েছে। মামলা-মোকাদ্দমায় তারা সিদ্ধহস্ত। কে কোন বিষয়ে কি লিখছেন তাদের সরকারের নজরদারি রয়েছে অথচ করোনাকে প্রতিরোধ করার জন্য কি কি ব্যবস্থা নেয়া হবে এই ব্যাপারে তাদের কোনো নজর নাই।

দুঃস্থ ও দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণসামগ্রী এবং দুঃস্থদের জন্য দেয়া সরকারি অর্থ ক্ষমতাসীনরা লুটপাট করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ বাড্ডার ৯৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে মহানগর উত্তর সভাপতি এমএ কাইয়ুমের উদ্যোগে এই ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠান হয়। এ সময়ে মহানগর উত্তর সহ-সভাপতি আবুল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক এজিএম শামসুল হক, ৯৭ নং ওয়ার্ডের সভাপতি রাশেদ আলম মনু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বাবু প্রমূখরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে দুঃস্থদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন রিজভী। এই সময় মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।