ঢাকা শনিবার, ১১ই মে ২০২৪, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১


করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি: ফখরুল


১০ মার্চ ২০২০ ২১:৫০

করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ব্যাপারে সরকার যথাযথ প্রস্তুতি, উদ্যোগ, প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা নিয়ে সরকারের উদাসীনতা জনগণ ক্ষমা করবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ব্যস্ত ছিল মুজিববর্ষ নিয়ে। জনগণ ১৯৭৪ সালের মতো আরেক দফা গণ মৃত্যুর শিকার হতে চায় না।’

তিনি বলেন, ইতালি থেকে ঢাকায় আসা ২ জনের রোগ বিমানবন্দরে শনাক্ত হয়নি। দেশে ফেরার ৪ দিন পর তাদের অবস্থার অবনতি ঘটলে তারাই চিকিৎসার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন। তখন সরকার তাদের হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে। কিন্তু ইতোমধ্যে তাদের একজনের স্ত্রী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে যারা এসেছিল তাদের কোয়ারেন্টাইনে না নেওয়া সরকারের আরেকটি ব্যর্থতা। ৩ দিন পর সোমবার এমন ৪০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়ার কথা জানা গেলো।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, যে ফ্লাইটে তারা ঢাকা এসেছেন সেই ফ্লাইটের অন্য যাত্রীরা, বিশেষ করে যারা কাছাকাছি বসেছিলেন, দীর্ঘ ভ্রমণের সময় তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকার পরও এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে জনসচেতনতা নিশ্চিত করার জন্য মিডিয়াসহ সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেমন দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল তাও নেওয়া হয়নি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যে প্রাক প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল তাও নিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রয়োজন বাড়বে জানা সত্ত্বেও তা যথেষ্ট পরিমাণে আমদানি কিংবা উৎপাদনের কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় গত রোববার সন্ধ্যার মধ্যেই বাজারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ৪ থেকে ৫ টাকার মাস্ক ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্র হয়েছে এবং সন্ধ্যার পর বাজারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাওয়া যায়নি। ফলে লাখো মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে বাধ্য হচ্ছেন।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সামান্য যে কটি হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার কথা বলা হচ্ছে সেগুলোর মান এবং আক্রান্তদের সুচিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন আছে। অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা থেকে ওষুধ, যন্ত্রপাতি, ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণ এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়ার জরুরি দায়িত্ব সরকার পালন করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা যত দ্রুত সম্ভব আক্রান্ত রোগী এবং সম্ভাব্য আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা এবং ভাইরাসের প্রকোপ যেন না বাড়ে তার জন্য সতর্কতা ও প্রতিরোধ মূলক যাবতীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে সরকারের ব্যর্থতা জনগণ কখনও ক্ষমা করবে না।

‘এসময় বিএনপির পূর্বঘোষিত সব কর্মসূচিও স্থগিত করেন তিনি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী,প্রমুখ ।

নতুনসময়/আনু