ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


করোনাভাইরাসে বিষয়টি সরকার গোপন করার চেষ্টা করেছিল: ফখরুল


১০ মার্চ ২০২০ ০০:৩৮

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেছিল। বিদেশি অতিথিরা আসতে অপারগতা প্রকাশ করায় সরকার করোনাভাইরাস আক্রান্তদের নাম ঘোষণা করেছে।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে দি ইউনিভার্সেল একাডেমির আয়োজনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের লেখা দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) গতকাল রোববার জানিয়েছে, দেশে তিনজনের শরীরে এ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সরকার করোনোভাইরাস নিয়ে এত দিন কোনো কিছুই করেনি এবং তারা খুঁজেও পায়নি। কী কারণে খুঁজে পায়নি জানি না। হঠাৎ করে কাল খুঁজে পেয়েছে। যখন বিদেশি অতিথিরা বাংলাদেশে আসতে অপারগতা প্রকাশ করলেন, তখনই এই তিনজনের নাম এল।’ তাঁর ভাষ্য, ‘আমার ধারণা তারা পুরোপুরি জিনিসটিকে গোপন করার চেষ্টা করেছেন। ব্যাধিটি বাংলাদেশে অনেক আগেই এসেছে বলে অনেকের ধারণা। এই ধারণাগুলো সত্যিকার অর্থে এখন প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।’

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থাগুলো নেয়নি অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিমানবন্দরগুলোসহ বিভিন্ন বন্দরে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা জাগাতে হবে এবং চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্ধারিত করে দেওয়া দরকার। এটাকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

৭ মার্চ এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘দেশে এমন একটা সময় ছিল যখন মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর যে অবদান, সেটাও মুছে ফেলা হয়েছিল। এমনভাবে বিকৃত ইতিহাস তৈরি করা হলো যেন কোনো এক মেজর বাঁশিতে ফুঁ দিল আর অমনি যুদ্ধ হয়ে গেল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। অথচ সে নিজেই চাকরি করত বাংলাদেশ সরকারের অধীনে। ৪০০ টাকা বেতন পেত। তাঁকেই ঘোষক বানানোর চেষ্টা হয়েছিল।’ তাঁর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে এই মেজরের বাঁশির ফুঁতেই সমগ্র জাতি ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। আপনারা তো কেউ পলায়নপর ছিলেন, কেউ আত্মসমর্পণ করেছিলেন।’

খন্দকার মোশাররফের বই নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বই দুটো এমন এক সময়ে বেরিয়েছে যখন সময়টা খারাপ। মূল্যবোধ ভেঙে যাচ্ছে। রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার সম্পর্কে যে ধারণ ছিল, তা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য আটকে রাখা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘বিচার বিভাগ একই ধরনের মামলায় অন্যদের জামিন দেন, মুক্ত করেন, তখন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন না কেন?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আরেক উপাচার্য আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মুস্তাহিদুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, দি ইউনিভার্সেল একাডেমির প্রকাশক শিহাব উদ্দিন প্রমুখ।

নতুনসময়/আনু