ফখরুলের জাতিসংঘ সফরে উৎকণ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী: মোশাররফ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতিসংঘ সফরের কারণে প্রধানমন্ত্রী উৎকণ্ঠায় আছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
রবিবার (১৬সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপিকে জাতিসংঘ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তারা নিজেরাই সেখানে গেছে। আসলে বিএনপি মিথ্যাচারে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এসব বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমাদের মহাসচিব জাতিসংঘে গেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে গেছেন। নিশ্চয় সেটা কোনো না কোনো ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে আঘাত অথবা হতাশা করেছে । সে জন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এসব কথা বলেছেন।
জাতীয় ঐক্যৈর বিষয়ে জানতে চাইলে মোশাররফ বলেন, আমাদের নেত্রী গত বছর বলেছেন, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সরকার কে পদত্যাগ করতে হবে, সেনা মোতায়েন করতে হবে। এখন আমরা অত্যন্ত খুশি ও আশাবাদী বিএনপি ও ২০ দলের বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি আমাদের দাবীরর সাথে একমত। এটি এখন জনগণের জাতীয় দাবীতে পরিণত হয়েছে। আমরা এটিকে স্বাগত জানাই।
জামায়াত ছাড়া বিএনপিকে জাতীয় ঐক্য করতে হবে যুক্তফ্রন্টের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এ কথা আমরা এখনও শুনিনি, আর তারা গতকাল যে দফা দিয়েছেন সেগুলো নিয়ে আমরা এখনও আলোচনা করিনি। সার্বিক বিষয় নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করা হবে। তার পরে জানানো হবে।
খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড নিয়ে মোশারফ বলেন, আপনারা জানেন যে আমাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করি। আমাদের নেত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতির ব্যাপারে উথকন্ঠা প্রকাশ করি। আমারা প্রথমে দাবি করেছিলাম তার নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া জন্য এবং তার পছন্দ অনুযায়ী নির্ধারিত হসপাটালে চিকিৎসা নিতে পারেন সে ব্যাপারে সুযোগ সুবিধা ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি, এটার জন্য আমরা অসন্তুষ্ট। আমরা মনে করি না এই সরকার সমর্থক চিকিৎসকদের দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপযুক্ত চিকিৎসা হবে। আমাদের এখনো দাবি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার তার পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসা একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হোক এবং অনতিবিলম্বে তার চিকিৎসা দেওয়া হোক।
দলের চেয়ারপারসন ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে কিনা এমন প্রশ্নে মোশাররফ বলেন, আমরা আগেই বলেছি খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কখনও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। জনগণ সেই নির্বাচন মনে নিবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়ে তার নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
তিনি আরো বলেন, গত পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে কাল পর্যন্ত আজগুবি অভিযোগে প্রায় ২ হাজার মামলায় লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। মৃত ও দেশে না থাকলেও রাজনৈতিক কারণে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা হচ্ছে। এসব মামলায় মৃত ব্যক্তিদের পুলিশ নাশকতা ও গোপন বৈঠক করতে দেখেছেন। মূলত নির্বাচন থেকে বিএনপিকে বাহিরে রাখতেই সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান,গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দপ্তর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন প্রমুখ।
আইএমটি