ভোটের মাঠে খেলোয়াররা

কড়া নাড়ছে একাদশ জাতীয় নির্বাচন। অক্টোবর মাসেই এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। দলীয় মনোনয়নের অপেক্ষায় না থেকে নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন টিকিট প্রত্যাশীরা। রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি ভোটের মাঠে নেমেছেন খোলোয়াররাও। আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিভিন্ন দলের ব্যানারে তারা নির্বাচন করবেন।
দেশের ফুটবলের এক সময়ের উজ্জ্বল নক্ষত্র আবদুস সালাম মুর্শেদী। মাঠের ফুটবল থেকে অবস্র নেওয়ার পর তিন তিনবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুল দিয়ে যোগ দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে। খুলনা-৪ আসনের সাংসদ মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুতে তার আসন শূন্য হওয়ায় সালাম মুর্শেদী সাতজনকে টপকে আওয়ামী লীগের মননয়ন বাগিয়ে নেন। শুধু দলের মননেয়োন নয়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও নির্বাচিত হলেন সাবেক এই ফুটবলার। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তার মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত।
বাফুফের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় গত নির্বাচনে নেত্রকোনার বারহাট্টা থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক জয় এবারো দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তার নির্বাচনী এলাকার আরো বেশ কয়েকজন আছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে।
বাফুফে ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভাপতি ও তারকা ফুটবলার আশরাফউদ্দিন চুন্নু ১৯৯১ সালের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ সদর থেকে নির্বাচন করেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে। এরপর আর দলীয় মনোনয়ন পাননি। পরবর্তীতে ওয়ান ইলেভেনে তৎকালীন সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে আওয়ামী লীগ থেকে দূরে সরে যান। তবে তিনি এবার আশাবাদী দল তাকে মনোনয়ন দিলে আবারো প্রার্থী হবেন।
বিএনপির বর্তমান ক্রীড়া সম্পাদক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক খেলা ছেড়ে এখন রাজনীতির মাঠে বেশ সক্রিয়। ইতোমধ্যে একাধিকবার কারাবরণও করেছেন। আগামী নির্বাচনে ঢাকার মিরপুর-পল্লবী থেকে নির্বাচনের লক্ষে ইতোমধ্যে গণসংযোগ শুরুও করেছেন। আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসলে তার প্রার্থিতা নিশ্চিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক নাইমুর রহমান দুর্জয় মানিকগঞ্জ সদর থেকে গত দুবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতে এসেছেন। এবারো তার প্রার্থিতা নিশ্চিত।
স্বতন্ত্র, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি মিলিয়ে পাঁচবার জাতীয় সংসদে ভোলা (তজুমদ্দিন-চরফ্যাশন) থেকে নির্বাচিত হযেছেন মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন বীরবিক্রম। একাধিকবার মন্ত্রী হলেও তার পরিচয় এক সময়ের মাঠ কাঁপনো ফুটবলার ও দ্রুততম মানব হিসেবে। সর্বশেষ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ায় প্রার্থী হননি। এবারো দলের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক পরিচালক শাহ নুরুল কবির শাহীন বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ২০০১ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন ময়নসিংহের ইশ্বরগঞ্জ আসন থেকে। পরবর্তীতে আর নির্বাচিত হতে পারেননি। এবারো দলের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী জাতীয় দলের সাবেক এ ক্রিকেটার।
এক সময় ঢাকা মোহামেডান ও জাতীয় ফুটবল দলের রক্ষণভাগের অন্যতম কাণ্ডারি কায়সার হামিদ খেলার মাঠে যতটা নির্ভরযোগ্য ছিলেন পরবর্তীতে ব্যক্তি ও রাজনীতির মাঠে ঠিক তার বিপরীতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত থাকলেও ১৯৯১ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিপক্ষে ঢাকার গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট আসন থেকে জাকের পার্টির ব্যানারে নির্বাচন করেন। একটা সময় জাতীয় পার্টির সঙ্গেও তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। বৃহত্তর ঐক্য হলে আগামী নির্বাচনে জাকের পার্টিও মিলতে পারে আওয়ামী লিগের সঙ্গে। সে ক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনেও ঢাকার কোনো আসন থেকে কায়সার হামিদের নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।
আরকেএইচ