ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


ছাড় দিতে প্রস্তুত বিএনপি


১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২১:১২

বিএনপির বড় ধরণের ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও বৃহত্তর ঐক্য গড়ার অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জায়ামাত গলার উপর বিষ ফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গণফোরাম ও যুক্তফ্রন্টের নেতারা জামায়াতকে নিয়ে ঐক্যে না যাওয়ার ঘোষণায় এই শঙ্কা আরো বেড়েছে।

তবে বিএনপি জামায়াতে ইসলামীকে রেখে কৌশলে ঐক্য গড়তে তোলর চেষ্টা করে যাচ্ছে । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবোর্চ্চ ছাড় দিয়ে হলেও বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে সরকারকে হটাতে চায় বিএনপি।

প্রয়োজনে ১০০ আসন পযর্ন্ত ছাড় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিএনপি। এর পেছনে তাদের গ্রহণযোগ্য যুক্তি রয়েছে।

এগুলো হচ্ছে ১. ঐক্য গড়তে তোলায় ব্যার্থ হলে সরকার আবারও যেনতেন নিবার্চন ক্ষমতায় থেকে যাবে। ২. তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বিএনপি বিলীন হতে পারে।
৩. ছোট রাজনৈতিক দলগুলোকে বেশি ছাড় না দিলে এই সুযোগ অন্য রাজনৈতিক দল নিবে।

তাই বিএনপি নিজের স্বাথের্ই সবোর্চ্চ ছাড় দিয়ে বৃহত্তর ঐক্যে করার আগ্রহী।

গণফোরাম ও যুক্তফ্রন্ট নেতারা জামায়াতকে নিয়ে ঐক্য নয় ঘোষণার পরও এ বিষয়ে বিএনপি নেতারা মুখ খুলেতে রাজি নন। তবে নীতিনিধার্রণী ফোরামের এক নেতা জানান, ড. কামাল হোসেন জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ঐক্য করতে চান না যেমন বলেছেন, তেমনি জামায়াতে ইসলামী কোনো নিবন্ধিত দল নয়, সেটাও বলেছেন।

এর মানে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়েই বতর্মান অবস্থায় যুগপৎ আন্দোলনে থাকার ইঙ্গিত। এ জন্য ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে আশা ছাড়ার এখনো কোনো কারণ নেই।

বিএনপি সূত্রমতে, দেশের প্রয়োজনে ১০০টি আসন ছাড় দিয়ে হলেও ঐক্যবদ্ধভাবে নিবার্চনে যাওয়ার অবস্থা তৈরি করতে চান দলটি।

ঐক্য গড়তে রাজনীতির গুণগত পরিবতর্ন আনা, সুশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি কী করবে, সে বিষয়ে সুনিদির্ষ্ট অঙ্গীকার করারও মাসুষিক প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ারসহ সব বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকমীর্র মুক্তি, সাজা বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নিবার্চনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নিবার্চন কমিশন পুনগর্ঠন, নিবার্চনে দেশীয় ও আন্তজাির্তক পযের্বক্ষক নিয়োগ, বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ, নিবার্চনে ইভিএম ব্যবহার না করা, রাষ্ট্রের সবর্স্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা এবং নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করাসহ প্রায় দেড় ডজন প্রস্তাবনার একটি খসড়াও তৈরি করা হয়েছে।

ছোট দলের গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব মেনে নিয়ে ঐক্য গড়তে সবোর্চ্চ আন্তরিকতা দেখাবে বিএনপি। সবার গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্ব মেনে নেওয়ার মানসিকতা রয়েছে বিএনপির।

জামায়াতকে রাখতে আপত্তি থাকলেও এ বিষয়ে খুব কৌশলে এই দলটিকে রাখার চেষ্টা করা হবে। সব মিলে এই মাসের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য গঠনে সবোর্চ্চ চেষ্টা করে যাবে বিএনপি। তা না হলে অক্টোবরের শুরুতে একাই আন্দোলন শুরু করবে দলটি।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি দেখাবে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ঐক্য প্রক্রিয়া সফল করতে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নিদের্শ দিয়েছেন।

বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতা বলেন, যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করতে চায় কিন্তু ২০-দলীয় শরিকদের সঙ্গে নয়। বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা হচ্ছে। সবোর্চ্চ ছাড় দেওয়ার পরও ঐক্য গড়ে না ওঠে তাহলে একলাচল নীতিতে যাবে বিএনপি।

বৃহত্তর ঐক্যের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যুক্তফ্রন্টের শরিক দল নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের সঙ্গে নয় শুধু বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করতে চান তারা।
তিনি আরো বলেছেল, এখন সবার প্রয়োজনেই জাতীয় ঐক্যের বিষয়টি ভাবছে। এখানে কোন দলের প্রস্তাবকেই গুরুত্বহীন মনে করা হচ্ছে না। এর মাধ্যমে একটি অভিন্ন লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

এসএমএন