আস্থা রাখুন শেখ হাসিনায়

গত কয়েকদিন খেয়াল করে দেখলাম, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন এক সংস্কৃতি চালু হয়েছে। আর তা হল "মিষ্টি সংস্কৃতি"। একটু ভেঙ্গে বললে যা দাঁড়ায় তা হল- আসন্ন ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নের জন্য আসন প্রতি প্রার্থী হয়েছেন গড়ে প্রায় দেড় ডজন। ইনাদের অধিকাংশই হয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কিম্বা বিশিষ্ট সমাজ সেবক।
দলে কতটুকু সময় দিয়েছেন বা কোন কোন পদে দায়ীত্ব পালন করেছেন সেগুলোর চেয়ে কার মানিব্যাগ কত স্বাস্থ্যবান সেটার এক সরব প্রতিযোগিতা যেন রাজনীতির মাঠ জুড়ে প্রতিয়মান। প্রায় প্রত্যেক প্রার্থীই দৌড়াচ্ছেন নামে বেনামে খোলা বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিকদের কাছে,যাঁরা নিষ্ঠার সাথে আজ একে তো কাল ওকে দলীয় নমিনেশন দিয়ে দিচ্ছেন সেই সাথে নতুন এই মৌসুমী ব্যবসার গোড়াপত্তনটাও করে নিচ্ছেন প্রার্থীদের উদার দক্ষিণার কল্যানে।
যখনই কোন প্রার্থীর নাম নিউজে আসছে তখনই চলছে উৎসব,শোডাউন আর সেই সাথে পাইকারি মিষ্টি বিতরণ। আমার মা অসুস্থ তাই কয়েকদিন হাসপাতাল ও বাড়িতে থাকতে হল।ইচ্ছে থাকলেও হয়ত নমিনেশন ফরমটা সংগ্রহ করা হত না প্রধানত দুটি কারনেঃ
এক. আমি ঢাকায় গিয়ে ফরম সংগ্রহ করতে পারতাম না, মা তখন হাসপাতালে তাই।
দুই. ফরমের মূল্য ৩০০০০/- টাকা তাই। (৩০০০০ টাকা সংগ্রহ করা আমার জন্য অসম্ভব তা নয় বরং সময়টা আমার বিপক্ষে ছিল।)
মাসের শুরুতে আমার অফিসের ৭ জনের বেতন দিতে হয় এর মধ্যে মা অসুস্থ তাই আমার বেতনের টাকা(এম আর আর ইন্টারন্যাশনাল নামের আমার একটা আইটি ফার্ম আছে যার সি ই ও হিসেবে ৫০০০০/- টাকা বেতন নেই আমি,লাভের টাকা এই কোম্পানির ক্ষেত্র বাড়াতে এক বছর কাজে লাগানোর নীতিগত স্বীদ্ধান্ত নেয়া আছে।) সেখানে খরচ করে পকেটে মাত্র ৫ হাজার টাকা,আর ফরম তোলার শেষ সময় একদিন বাঁকী।হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম ঠিক তখনই যেন দেবদূতের মত পাশে দাঁড়াল দুই বন্ধু ও কিছু ছোট ভাই(নামগুলো কোন এক সময় বলব)
তারাই আমাকে এক প্রকার কাঁধে তুলে নিয়ে প্রতিটি ধাপ পার করে দিল,সাক্ষাতকার শেষে আবারও রাজশাহী। কাজ করছি আমার নিজের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ রাজশাহী জেলা শাখাকে আগামী নির্বাচনে দলের প্রকৃত স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তৈরী করতে। কাজ করছি রাজশাহী, পাবনা,নাটোর, নওগাঁ,চাঁপাই নবাবগঞ্জ এই পাঁচ জেলা আওয়ামীলীগের। অসুস্থ মা ও তিনটি পরিবারের দায়ীত্বও আমার।
যদি আমার অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা আমার অযোগ্যতা হয় তবে চাইনা মনোনয়ন।আমি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কোন ব্যবসায়ী বা হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছের নমুনা নই।আমি সমাজসেবকও নই,পরিবারের সেবা শেষে দলের সেবা পর্যন্ত যেতেই আমার দমবন্ধ হবার পবনতা প্রতিয়মান,তাই এখনও আওয়ামী সেবক।সমাজসেবা করার সুযোগ কই।আর ছাত্রলীগ নেতাদের টাকা কামানোর সুযোগ নেই,সুতরাং এটা আমার অযোগ্যতা কি না তা আওয়ামীলীগই ঠিক করবে বিশ্বাস রাখি।
যাহোক আমিও একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। বাড়িতে অবস্থান কালে কিছু নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী সাক্ষাতে আসতে পারে ভেবে কিছু নাস্তা-পানি আনাতে গিয়েই বাধে মূল বিপত্তি। বাজারে কোন মিষ্টি নেই।
এই মিষ্টি খেয়ে উদ্দাম নৃত্য করা গনতান্ত্রিক এই প্রজাতন্ত্রের মালিকদের দেখে আমি খুশি না হয়ে বরং আতঙ্কিতই হলাম।আতঙ্কের সাথে ভাবলাম এই জনগন স্বীদ্ধান্ত নেয় কে কত মিষ্টি বিতরণ করতে পারে তার নিরিখে।
সেখানে নেতৃত্বগুন যে বড়ই হাস্যকর এক শব্দ।
এরা নিমিশেই অতীত ভূলে লাভ খোঁজা প্রবনতায় মত্ত।
এরা কিভাবে সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করবে?
যদি জনগন সচেতন না হয় আর যেখানে সেখানে মিষ্টির হাঁড়ি খুঁজে বেড়ায়,তবে তাদের নির্বাচিত নেতাগন নির্বাচন পরবর্তী ৫ বছর কি করবে?
যত মিষ্টির হাঁড়ি পাবে সবই কি গিলে খাবে না?
আজ এত হতাশা আর আতঙ্কের মাঝে একটু স্বস্তি আর নিরাপত্তার নাম দেশরত্ন শেখ হাসিনা।যাঁর ধমনীতে জাতির পিতার রক্ত,যাঁর বুকে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃড় প্রত্যয়।
আস্থা রাখি শেখ হাসিনায়
ভরশা রাখি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি।
যা হবে ভালই হবে ইনশাআল্লাহ।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও সাবেক সভাপতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ