ঢাকা শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১


আব্দুল জলিল ও মান্নান ভুঁইয়ার ব্যর্থ সংলাপের উপাখ্যান।


১ নভেম্বর ২০১৮ ১৮:১৫

ফাইল ফটো

আমি তখন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। রাজনীতি তেমন না বুঝলেও প্রতিদিন সংবাদপত্র পড়া, বিভিন্ন টেলিভিশনের সংবাদ ও টকশো দেখা ছিল আমার নিয়মিত কাজের অংশ।

২০০৬ সাল জুড়ে ছিল দশম নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-সমলোচনার ঝড়। সে বছর অক্টোবর মাসে তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল সংলাপে বসেন সংসদ ভবনে । তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংস্কারের প্রশ্নে বিরোধীদলের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
১ম দিনের আলোচনার পর বিএনপি মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া বলেন, "১৪ দলের পক্ষ থেকে তাদের দাবিগুলো আমার কাছে হস্তান্তর করেছেন। আমি তাদের প্রত্যেকটি দাবি সম্পর্কে ব্যাখ্যা চেয়েছি। তিনি ব্যাখ্যা ব্যাখ্যা করেছেন। আমি এ ব্যাখ্যাগুলো নিয়ে আমার দলের কাছে ফেরত যাব এবং দলের সাথে আলোচনা করবো।"এ সময় আব্দুল মান্নান ভুঁইয়ার পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল।আ.জলিলও একই কথা বলেছেন। প্রথম বৈঠকের পর তারা জানিয়েছেন যে আলোচনা আরো চলবে।

তখনকার সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের তরফ থেকে ২টি দাবিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়। ১. তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানের না থাকা এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে এমএ আজিজের পদত্যাগ।

কিন্তু এ দুটি বিষয়ে কোন বিএনপির দিক থেকে কোন ইতিবাচক সাড়া আসেনি। একদিকে আওয়ামী লীগ রাস্তায় আন্দোলন করতে থাকে এবং অন্যদিকে ক্ষমতাসীন বিএনপি ২০০৭ সালের ২২শে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখ বিচারপতি কেএম হাসান প্রধান
উপদেষ্টার পদ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ফলে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ নিজেই প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে নেন। এক পর্যায়ে বিরোধী রাজনৈতিক জোট নির্বাচন থেকে সরে যায়।শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে সে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। ফলে প্রায় দুই বছর সেনা-সমর্থিত সরকার দেশ পরিচালনা করে।

এর পর পার হয়ে গেছে প্রায় এক যুগ। আবার সংলাপ শুরু হতে যাচ্ছে। তবে এবার কোন মহাসচিব পার্যয়ের সংলাপ নয়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেনের । আজকের এই সংলাপ কতটুকু সু-বাতাস বয়ে আনবে সেদিকে তাকিয়ে আছে দেশবাসি।