অনৈতিকভাবে জবানবন্দী নিয়ে বিহারীদের ফাঁসানোর অভিযোগ

রাজধানীর পল্লবীতে নির্বাচনের আগে বিস্ফোরক আইনে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় পল্টনে পুলিশের গাড়ী পোড়ানো যুবক ওয়াসীমের জবানবন্দী অনৈতিকভাবে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন উর্দু স্পীকিং পিপলস ইউথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্ট'র সভাপতি মোঃ সাদাকাত খান ফাক্কু।
সোমবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে উর্দুভাষী সংখ্যালঘুদের সংগঠন ইউএসপিওয়াইআরএম'র' প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভায় এসব অভিযোগ করেন তিনি।
সাদাকাত খান বলেন, আমাদের সংগঠন কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। তারপরও আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমরা এই মামলাকে “গায়েবী” মামলা বলে অভিযোগ করেছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ কমিশনার বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছি। আমরা আমরা দুই সপ্তাহের মধ্যে এই গায়েবী মামলা থেকে নীরিহ ভাষাগত সংখ্যালঘুদের অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু অব্যাহতি দেয়া তো দূরের কথা উল্টো এই মামলায় আমার, আমার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও আমার সন্তানসহ ক্যাম্পবাসীদের বিরুদ্ধে পল্টনে পুলিশের গাড়ী পোড়ানো যুবক ওয়াসীমের জবানবন্দী নিয়েছে পল্লবী থানার এসআই মুনসি শহিদুল ইসলাম। এ জবানবন্দী সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে নেয়া হয়েছে। কারণ ওয়াসীম একজন মাদকসেবী। তাছাড়া এ মামলায় সে এজহারভূক্ত আসামী না। প্রশাসন এই গায়েবী মামলাকে হালাল করতেই এমন কাজ করেছে।
তিনি বলেন, কালশী হত্যার বিচারের দাবিকে দাবিয়ে রাখতে ও আমাদের একমাত্র বাসস্থান আমাদের ক্যাম্প উচ্ছেদ করতেই পুলিশ-প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কারণ বিহারীদের মধ্যে এক মাত্র আমাদের সংগঠন কালশী হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার রয়েছে। পল্লবী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা ও এই মামলার বাদী ৩ নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি এম এম বিপ্লব কালশীতে ৯ বিহারীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। কালশীর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে আমি নিজেই আদালতে রীট করেছি। মহামান্য হাইকোর্ট এ বিষয়ে একটি রুলও জারি করেছেন। এছাড়াও আমার সংগঠন কালশী হত্যার বিচার চেয়ে কর্মসূচী দিয়ে আসছে।
তিনি আরো বলেন, ক্যাম্প উচ্ছেদের বিরুদ্ধেও আদালতে আমাদের সংগঠন রীট করেছে।আপিল বিভাগ উচ্ছেদের বিরুদ্ধে স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন যা এখনও বহাল আছে। তারপরও বিভিন্ন এলাকায় ১ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে ক্যাম্প খালি করতে বলছেন স্থানীয় কাউন্সিলর রা। এই রকম গায়েবী মামলা দিয়ে আমাদের সংগঠনকে দাবিয়ে রাখতে পারলেই তারা খুব সহজে ক্যাম্প উচ্ছেদ করতে পারবে।
এই সকল ষড়যন্ত্র করে আমাদের সংগঠনকে আন্দোলনের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোক উর্দুভাষীদের এই নেতা বলেন, আমরা এখন আন্দোলনে যাচ্ছি না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করবো । কারণ আমরা ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে নেতৃত্ব দেই। এতেও যদি কাজ না হয় তাহলে আমরা আত্মহতি কর্মসূচী দেবো এবং এর সম্পূর্ণ দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, ইউএসপিওয়াইআরএমের সাধারণ সম্পাদক শাহিদ আলী বাবলু, সহ-সভাপতি আব্দুর রাশেদ খান বিরেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোক্তার আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, মঞ্জুর রেজা খান, দপ্তর সম্পাদক শেখ নাজির উদ্দীন রাশেদ, ছাত্রনেতা ফাহিম হোসেন রাজু, আসিফ ইকবাল, মাকসুদ আলম, মো. বেচু, সাদ্দাম প্রমুখ ।