ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


ব্যারাকে ফেরত যাচ্ছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি


২ জানুয়ারী ২০১৯ ০৫:১৪

ফাইল ফটো

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন শেষে আগামীকাল বুধবার ব্যারাকে ফেরত যাচ্ছে সেনাবাহিনী এবং বিজিবি। এছাড়া সারাদেশে মোতায়ন করা কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, আনসারসহ বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সকল বাহিনীর সদস্যরা আগামীকাল নিজ নিজ ইউনিটে ফিরবেন বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। তবে বিজয়ী বা পরাজিত কোনো প্রার্থী বা তাদের সমর্থকরা যাতে কোনো ধরনের সহিংসতায় না জড়ায় এবং সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে, সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে পুলিশকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে । সতর্ক আছে র‌্যাবও।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান,বুধবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনকালীন বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা শেষ হচ্ছে। কালই সারা দেশে মোতায়েন থাকা সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্টগার্ড, আনসারসহ সব বাহিনী তাদের নিজ নিজ ইউনিটে ফিরে যাবে। এ সময়ের পরও যাতে কোনো মহল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা সহিংসতা ঘটানোর সুযোগ না পায়, সে বিষয়ে সতর্ক রয়েছে পুলিশ । অন্য বাহিনীও সহায়তায় প্রস্তুত থাকবে।

নির্বাচন-পরবর্তী নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন,‘ভোটের আগে থেকেই সারা দেশে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল। পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি কোস্টগার্ড এবং কোনো কোনো এলাকায় নৌবাহিনীর সমন্বয়ে মাধ্যমে আমরা নিরাপত্তাব্যবস্থা কার্যকর করি। ভোটের দিনও যাতে সাংঘর্ষিক কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হয় পুলিশ তার জন্য সর্বোচ্চ সচেষ্ট ছিল। এটাও পুলিশ সফলভাবে করতে পেরেছে। এখন নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা না হয়, সে বিষয়ে পুলিশ লক্ষ রাখছে। বিশেষ করে সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ অন্যান্য সংস্থা ২ জানুয়ারির পর নিজ নিজ দপ্তরে ফিরে গেলেও যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে সেদিকে পুলিশ লক্ষ রাখছে। নির্বাচনের দিন চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রগুলো উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

রাজধানীতে নির্বাচন-পরবর্তী নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে যাতে কেউ কাউকে কোনো হুমকি দিতে না পারে, সেজন্য আমরা সতর্ক আছি এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিয়েছি। যদি কেউ এর পরও এমন কোনো কর্মকাণ্ড করে, সে যেই দলের হোক, যে পদের হোক, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নিজ কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে কমিশনার আরো বলেন, ‘নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা ২ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি। নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী, তার সমর্থক, কর্মী অথবা অন্য কোনো ব্যক্তি যদি সাধারণ নাগরিকদের এই জয়-পরাজয় নিয়ে কোনো হুমকি-ধমকি দেয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সেনাবাহিনী ও বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা নিজ নিজ দপ্তরে ফিরে গেলে নিরাপত্তাব্যবস্থা কেমন হবে, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খানের কাছে। তিনি নতুন সময়কে বলেন,‘২ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক র‌্যাব সদস্যরা মাঠে আছেন। তারা বিশেষ টহল ও তল্লাশি অব্যাহত রেখেছেন। ২ জানুয়ারির পর র‌্যাব রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে আসামি গ্রেপ্তার, মাদকদ্রব্য উদ্ধার, গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ অন্যান্য নিরাপত্তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।’

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, ১ হাজার ১২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ছিল সারা দেশে। আগামীকালই তারা নিজ নিজ ইউনিটে ফিরে যাবে। এরপর নিরাপত্তায় বাহিনী সদস্যদের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহসিন রেজা নতুন সময়কে বলেন,‘বিজিবি সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে। স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজন বোধ করলে বিজিবি যেকোনো সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত আছে।’