ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


সেনাবাহিনী মাঠে নামছে সোমবার


২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০১

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর সোমবার থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। আগামীকাল থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবে। ভোটকেন্দ্র ও ভোটগ্রহণের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে এবং নির্বাচনী এলাকায় যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে এই সময়ে তারা কাজ করবেন।

এই নির্বাচনে, "ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার" অনুযায়ী কাজ করবেন সশস্ত্র বাহিনীর এ সদস্যরা। সেনাবাহিনী জেলা/উপজেলা/মহানগর এলাকার সংযোগস্থলে ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবেন। তারা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।

গত ১৯ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা এ সংক্রান্ত পরিপত্রে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। তাতে এ সব কথা বলা হয়েছে। এদিকে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এবার প্রায় ৫০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রেখেছে কমিশন।

জানা গেছে, যে সব এলাকায় সেনা বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হবে সে সব পয়েন্টে গতকাল শনিবার থেকে পরিদর্শন করছেন সেনা বাহিনীর কর্মকর্তারা। আজ রোববার থেকে নির্ধারিত স্থানগুলো সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে নেয়া হবে। আগামীকাল থেকে ওই সব স্থানে ক্যাম্প স্থাপন করে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী।-নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে পুলিশসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তারা সহায়তা করবেন।

পাশাপাশি রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুযায়ী উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হবে।রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনাকক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।

সেনাবাহিনী বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবেন। যে কোনো অবৈধ সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে, তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবেন। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারবেন। সেই অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নেবেন।

জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতে পারবেন।
যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটার আশঙ্কায় সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিত নির্দেশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মৌখিক নির্দেশ দেয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন।

অন্যদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে উপকূলীয় এলাকায় কোস্ট গার্ডের ৪০ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা ২২ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন। গতকাল শনিবার কোস্ট গাডের্র সহকারী গোয়েন্দা পরিচালক লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মারুফ এ তথ্য জানান।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য নির্বাচনের সময় মাঠে থাকবে পুলিশের ১ লাখ ৭০ হাজার সদস্য। ২ লাখ ১০ হাজারের ফোর্সের ৮০ ভাগ সদস্য এদিন ব্যস্ত থাকবে নির্বাচনী দায়িত্বে।
কাউকে দুই শিফট আবার কাউকে আরও বেশি সময় ডিউটি করতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী, ভোটার, প্রিসাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসারসহ প্রত্যেককে নিরাপত্তা দিতে ইতোমধ্যে নির্বাচনী ছক তৈরি করেছে পুলিশ। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যরা নিজেদের ও অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, র‌্যাব সদস্যরা মাঠে থাকলেও নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব থাকবে পুলিশের ওপর।
পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন্স) মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, সারাদেশে নির্বাচন আগেপরে কমবেশি ১ লাখ ৭০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। তাদের মধ্যে কেউ ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা মাঠে কাজ করবেন,
কেউ দুই শিফটে ১৮ ঘণ্টা, আবার কাউকে এর চেয়েও বেশি দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের ২-১ দিন আগ থেকে নির্বাচনের ২-৩ দিন পর পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়, কেন্দ্রে ব্যালট ও ব্যালট বাক্স আনা-নেয়াসহ অন্যান্য দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ।
এ গুরুত্বপূর্ণ সময় অতি জরুরি এবং একান্তই পারিবারিক কোনো সমস্যা না থাকলে কাউকে ছুটি দেয়া হচ্ছে না।