ঢাকা সোমবার, ২১শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


নেত্রকোনা-৪:তিন প্রার্থীই নারী


২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৯

ছবি সংগৃহিত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি) আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের তিনজন প্রার্থীই নারী।এ নিয়ে এলাকার ভোটারদের মধ্যে তুমুল আলোচনা এবং নানা হিসেব-নিকেশ চলছে।
এখানে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য রেবেকা মোমেন, বিএনপি থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ও গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার।

এরই মধ্যে রেবেকা মোমেনকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

জেলা সদরের এমপি থাকা অবস্থায় আবদুল মমিন মারা যায়।এর পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে তার স্ত্রী রেবেকা মমিনকে মনোনয়ন দেয়া হয় এ আসন থেকে। অন্যদিকে সংস্কারপন্থী হওয়ায় লুৎজ্জামান বাবর বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত হন।

কিন্তু বাবর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করলেও রেবেকা মমিনের কাছে হেরে যান। ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল কর্নেল (অব.) আতিকুল হককে।তবে,তার ভরাডুবি হয়।

গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবার এমপি নির্বাচিত হন রেবেকা মমিন।

এদিকে এই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী।

গত সোমবার বিকেলে দলীয় হাইকমান্ড থেকে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি শ্রাবণীকে জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০ নভেম্বর তার পক্ষে ছেলে লাব্বি ইবনে জামান নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন। ওইদিন মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরি উপজেলা বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

জলি তালুকদার হাওরবাসীর জীবন মান উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তারই ফলশ্রুতিতে তাকে বাম গণতান্ত্রিক জোট থেকে এই আসনটিতে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

হাওরের সন্তান হিসেবে তিনি অবহেলিত জনপদের পাশে ইজারাপ্রথা বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছেন জলি তালুকদার।’জাল যার জলা তার’এই নীতি বাস্তবায়নে দেশের বিভিন্ন ফোরামেও কথা বলেছেন। জেলেসহ কৃষকদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে অধিকার আদায়ে নিরলসভারে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

এবার হাওরাবাসীর ফসল ডুবির পর এক বছরের জন্য জলমহাল জন্মুক্ত রাখার আন্দোলন করেও সফল হয়েছেন।

জলি তালুকদার ময়মনসিংহ জেলা ছাত্র ইজনিয়নের সভাপতি ও পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে শুরু করে শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এরপর একে একে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি আদায়ে শ্রমিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

যার জন্য অসংখ্যবার গ্রেপ্তারও হন। পাশাপাশি জেলও খেটেছেন তিনি। বর্তমানে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয় কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিউনিস্ট পার্টির তিনজন সম্পাদকের মধ্যে অন্যতম তিনি।

জলি তালুকদার শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন।তিনি মনে করেন এলাকাবাসীর উন্নয়নে স্থানীয় সাংসদদের কাজ করার জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে ।

যেমন হাওরাঞ্চল দেশের অন্যতম একটি মিঠা পানির আধার।এই পানিকে সঠিকভাবে কাজে লাগালে যেমনি দরিদ্র জেলে ও কৃষক শ্রেণি বাঁচবে, তেমনি সরকার ও নেত্রকোনার উন্নয়নে রাজস্ব বাড়বে।

তিনি বলেন,এমন প্রাকৃতিক সম্পদ প্রভাবশালীদর দখলমুক্ত হলে বাঁচবে আপামর হাওরবাসী। তাই তিনি হাওরের প্রতিটি ঘরকে নিজের ঘর মনে করে লড়াই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।