নববর্ষে শহর জেগে উঠলো—আয়োজনে ছিল প্রশাসন, প্রাণে ছিল মানুষ

পুরো শহর যেন একদিনের জন্য নতুন রঙে সেজে উঠলো। চারপাশে লাল-সাদা ঝলক, কানে ভেসে আসা ঢাকের শব্দ, আর মানুষের মুখে প্রাণবন্ত হাসি—নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করতে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন চত্বরে আয়োজনে করা হয় বিশেষ বৈশাখী মেলা। আর তাতে শুধু মঞ্চ নয়, মঞ্চের বাইরেও গড়ে ওঠে হাজারো গল্প।
প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হলেও পুরো আয়োজনটি যেন হয়ে উঠেছিল জনগণের উৎসব। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে মেলার প্রবেশপথ পর্যন্ত সাজানো হয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যে। ছোট-ছোট ছেলেমেয়েরা একে অপরের মুখে রঙ মেখে বলছে, “শুভ নববর্ষ!”
মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক নিজেই। কিন্তু মানুষ খুঁজছিলেন আরেকজনকে—এ মেলায় আসা একেকজনের গল্পের ধাঁচ একেকরকম রঙিন ও বর্ণিল। সে গল্পটাও যেনো নতুন বছরের সাথে পাল্লা দিয়ে নিজেও নতুন হয়ে ওঠলো।
মেলায় ছিল বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যের গান, নৃত্য, আর এক পাশে ছিল ঐতিহ্যবাহী খাবারের পসরা।
নৃত্যশিক্ষক শুভ দাসের পরিচালনায় যখন শিল্পীরা মঞ্চে উঠে 'ধিন তাক-তাক, ধিতান-ধিতান নাচেরে' গানের তালে-তালে নাচ ধরলেন তখন এই সাংস্কৃতিক আয়োজনে মেলার ভীড় যেনো থমকে দাঁড়ায়। অনেকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে এ নৃত্য উপভোগ করেছেন আর মোবাইলে ধারন করেছিলেন ভিডিও।
লোকজ মেলায় দেখা গেলো লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাইন উদ্দিন পাঠানকে। তিনি বললেন, লোকজ মেলার পূর্বে যে আয়োজন দেখতাম সেটার আনন্দ ছিল একরকম, এ সময়ের আয়োজন আরেকরকম। তবে সবমিলিয়ে ভালো লেগেছে।
শহর আজ শুধু প্রশাসনের উদ্যোগে রঙিন হয়নি, রঙিন হয়েছে মানুষের মনের ছোঁয়ায়। উৎসবের শেষে সবাই যখন বাড়ি ফিরছিল, তখনও কারো মুখে ছিল না ক্লান্তি—ছিল একটাই কথা: 'এমন দিন যেন আবার আসে, আবার জাগিয়ে তোলে আমাদের।'