ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


বইমেলায় বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ চলবে


১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৪২

সংগৃহীত

ন্যাপকিন নয়; ডায়াপার, পেস্ট, ব্রাশসহ আরও কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।”

 

বাংলা একাডেমির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রসার ও ব্যবহার সম্পর্কে বাংলা একাডেমির কোনো প্রকার সংকোচ থাকার প্রশ্নই আসে না। বইমেলার পণ্যায়নের একটা ব্যাপার স্পর্শকাতর ইস্যু হয়ে অন্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। তার প্রমাণ, একদিকে আমরা অন্য অনেকগুলো পণ্যের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নিয়েছি। অন্যদিকে ইভেন্টকে বলেছি, সৌজন্য হিসেবে তারা যেন স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রয়োজনমাফিক বিতরণ করে।”

 

 

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ওয়াশ রুমের পাশে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা রাখবে, এটাও আমরা নিশ্চিত করছি।”

 

 

 এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রাণ-আরএফল গ্রুপকে দেওয়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ড্রিমার ডংকি’র পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী রাকিব হাসান সই করা চিঠিতে বলা হয়, আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে প্রাণ আরএফএল গ্রুপের নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য ব্রান্ড স্টে-সেইফ বইমেলা প্রাঙ্গণে দুটি স্টল পরিচালনা করে আসছে। প্রথম দিকে কোনো সমস্যা না থাকলেও গত ১১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে বেশ কিছু ইসলামিস্ট গ্রুপ ন্যাপকিনকে গোপন পণ্য বলে আখ্যা দেয়, এবং এর প্রকাশ্য প্রদর্শনী বা বিক্রি বন্ধের দাবি জানায়। এর পরদিন আরও অনেক মানুষ একই দাবি নিয়ে হাজির হয়। পরে বাংলা একাডেমি পুলিশ, আনসারসহ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ভলান্টিয়ারদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি ঠান্ডা করা হয়। গতকাল (১৩ ফেব্রুয়ারি) স্টল দুটি খুলে দিলে কিছু গ্রুপ সরাসরি এসে বাংলা একাডেমিতে অভিযোগ করে।

 

 

চিঠিতে আরও বলা হয়, এদেশে এই মুহূর্তে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে মব হচ্ছে। এ ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য উক্ত স্টল দুটি বন্ধ করা অত্যাবশ্যকীয়। আপনাদের ব্যবসায়িক স্বার্থকে বিবেচনায় রেখে স্টল দুটি অন্য পণ্য (যেমন শিশুশিক্ষা সরঞ্জাম) দিয়ে প্রতিস্থাপনের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে আলোচনা সাপেক্ষে। এমন অবস্থায় উক্ত স্টল দুটি আলোচনা সাপেক্ষে অন্য পণ্য দিয়ে প্রতিস্থাপন করার জন্য জানানো হলো। আপনার বিশেষ সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য।

 

সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের কাছেও চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়।

 

 

ভাইরাল হওয়া ওই চিঠির কপিতে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম এর সই দেখা গেছে। সেখানে মহাপরিচালক লিখেছেন, এই পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল। অতিদ্রুত এ ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

 

গতকাল রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা ট্রিবিউনকে ওই চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ড্রিমার ডংকি’র পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী রাকিব হাসান।

 

তিনি বলেন, বইমেলায় যেহেতু অনেক নারী আসেন। তাই নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতার কথায় মাথায় রেখে স্টলে স্যানিটারি ন্যাপকিন রাখতে আমরা আপত্তি জানাইনি। কিন্তু পরে কিছু মানুষ এটিকে ‘গোপন পণ্য’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানায়। তাই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাধ্য হয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ন্যাপকিন সরিয়ে নিতে অনুরোধ জানাই। পরে তারা তাদের পণ্য সরিয়ে নিয়েছে।

 

এদিকে স্টল দুটি বন্ধ রাখার বিষয়ে বাংলা একাডেমির সচিব ও বইমেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রধান সেলিম রেজা সংবাদমাধ্যম রোববার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মেলায় অনুমোদন ছাড়া পণ্য বিক্রির জন্য স্টল দুটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা একাডেমি।