ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


আয়নাঘরে থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে তসলিমা নাসরিনের পোস্ট


১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪৭

সংগৃহীত

ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ‘আয়নাঘর’ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে তোলপাড়। দেশ-বিদেশের সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মিদের নিয়ে বুধবার আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এবার আয়নাঘর নিয়ে মুখ খুললেন ভারতে অবস্থান করা লেখক তসলিমা নাসরিন। 

 

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে এ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তিনি।

 

 

তসলিমা নাসরিন লিখেন, ‘অনেকে আয়নাঘর দেখে হাসছেন, বলছেন আয়নাঘর এমন হতেই পারে না, আয়নাঘরে শাওয়ার থাকবে কেন, হাই কমোড থাকবে কেন, ঘুলঘুলি থাকবে কেন। আমার কিন্তু সন্দেহ হয় না। আয়নাঘর যে ঠিক জেলখানার আদলে বানাতে হবে, তার কোনও কথা নেই। আয়নাঘরগুলোর কোনও নির্দিষ্ট আকার আকৃতি থাকে না। আয়নাঘর একটি ফাইভস্টার হোটেলের রুমও হতে পারে।’

 

আয়নাঘরে থাকার অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও লিখেন, ‘নিরাপদ ঘর নামের একটি আয়নাঘরে বেশ কয়েক মাস থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। আয়নাঘরে সবসময় যে লাঠিসোটা বা চাবুক দিয়ে পেটানো হয়, তা নয়। ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়, তা-ও নয়, নাৎসিদের মতো গ্যাস চেম্বারে ঢোকানো হয়, তা নয় কিন্তু। আয়নাঘরে বাস করলে তুমি কী খাবে, কখন খাবে, কোথায় হাঁটবে, কতটুকু হাঁটবে, কার সঙ্গে কথা বলবে, কী বলবে, কখন ঘুমোবে, কী পড়বে, কী ভাববে, কী দেখবে, ইত্যাদি তুমি নও, নিয়ন্ত্রণ করবে অন্য লোক। মূলত তোমাকে মানসিক নির্যাতন করা হবে।’

 

 

সবশেষে তসলিমা নাসরিন লিখেন, ‘মানসিক নির্যাতন ব্যর্থ হলে নানা কৌশল অবলম্বন করে শারীরিক নির্যাতন শুরু হবে। এ নির্যাতন মৃত্যু পর্যন্ত যেতে পারে যদি তুমি আপস না করো।’

 

 

প্রসঙ্গত, সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় বিরোধীদের গোপনে ধরে এনে এই ছোট্ট ঘরে আটকে রেখে চালানো হতো মধ্যযুগীয় নির্যাতন।