ঢাকা সোমবার, ২১শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


খালেদা জিয়ার সাত বছর কারাদণ্ড হতে পারে


২৯ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:৫৩

ফাইল ফটো

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারিক কার্যক্রম চালানোর আদেশ বাতিল চেয়ে করা আবেদনের ওপর আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এমন আদেশের ফলে জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় বিচারিক রায় দিতে আর কোনো বাধা থাকল না। রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হলে খালেদা জিয়াসহ এই মামলার অপর আসামিদের সর্বনিম্ন তিন বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড হতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

আদালতের এই আদেশের ফলে আপিল বিভাগের রায়ে ন্যায়বিচার পাননি বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন এই মামলায় রায় ঘোষণায় কোনো বাধা নেই।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, ‘আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করায় বিশেষ জজ আদালতে রায় ঘোষণায় আর কোনো বাধা রইল না।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু বাংলা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার ধারা অনুযায়ী আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর কারাদণ্ড হতে পারে। আর সর্বনিম্ন সাজা হতে পারে তিন বছর। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ারে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।’

আসামি পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, তারা আশা করছেন আসামিরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পাবেন।

গত ২৮ অক্টোবর খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারিক কার্যক্রম চালানোর আদেশ বাতিল চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। পরে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।

২০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫-এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। এ আদেশ বাতিল চেয়ে রিভিশন আবেদন করলে ১৪ অক্টোবর হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে দেন। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ১৫ অক্টোবর আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

এর পর ১৬ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ের জন্য ২৯ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।এ অবস্থায় ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল মামলার রায় হবে কিনা তা অনেকটা আপিল বিভাগের পরবর্তী আদেশের ওপর নির্ভর করছিল। আজ আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় ওই রায় ঘোষণায় বাধা কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

৪ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করেন। ৫ সেপ্টেম্বর সেখানে আদালত বসে। কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া সেদিন আদালতে হাজির হয়ে আদালতকে বলেছিলেন, এ আদালতে ন্যায়বিচার নেই। তিনি অসুস্থ। আদালতে আসবেন না। যতদিন ইচ্ছা আদালত তাকে সাজা দিতে পারেন।

প্রসঙ্গত, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর পরে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে এ মামলার আসামিদের বিচার কাজ শুরু হয়।

আরকেএইচ