ঢাকা সোমবার, ২১শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


‘দুই দিন কষ্ট কর, আজীবন আরামে গাড়ি চালাবি ’


২৮ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:৫২

সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার ‘কর্মবিরতি’ পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। রোববার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ‘কর্মবিরতি’র নামে অফিস ও স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের হেনস্থা করছে পরিবহন শ্রমিকরা ।

পরিবহন শ্রমিকেরা গণপরিবহন চালানো বন্ধ রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে অটোরিকশা থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন। মোটর সাইকেল থামিয়ে চাবি নিয়ে যাচ্ছেন আবার ব্যাক্তিগত গাড়ির চালকদের মুখে পোড়া মোবিল বা রং মাখিয়ে দিচ্ছেন। রাজধানীর বেশ কিছু সড়কে পরিবহন শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে এভাবেই সাধারণ মানুষদের হেনস্তা করছেন।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় যাত্রী নিয়ে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা আসতেই পরিবহন শ্রমিকরা হামলে পড়ে তাতে। অটোরিকশা থেকে যাত্রীদের টেনেহিঁচড়ে নমিয়ে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। চালককে নামিয়ে চড়থাপ্পড় মারতে শুরু করলেন তাঁরা। অটোরিকশাটি উল্টে দিয়ে চাবি নিয়ে গেলেন এক শ্রমিক। চালক হাউমাউ করে কাঁদছেন। এক শ্রমিক নেতা এসে অটোরিকশার চালকের পিঠে হাত দিয়ে ধমক দিয়ে বললেন, ‘যা, সোজা গ্যারেজে চলে যা। দুই দিন রাস্তায় নামবি না। এই ধর্মঘট কার জন্য? তোগো জন্যই তো, দুই দিন কষ্ট কর, আজীবন আরামে গাড়ি চালাবি।’

বিআরটিসির গাজীপুর ডিপোর ম্যানেজার বুলবুল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, সকালে আমি কিছু বাস বের করেছিলাম। কিন্তু গাজীপুর চৌরাস্তা এবং বোর্ড বাজারে সেগুলো আটকে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। আমাদের কয়েকজন চালককে পিটিয়েছে। এজন্য এখন বাস চালানো বন্ধ আছে। এছাড়া পাঠাও উবারসহ বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানের গাড়িতে যাতায়াতকারী যাত্রীদের রীতিমতো হয়রানি করা হচ্ছে।

শনিবার শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াজিউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ‘সড়ক পরিবহন আইন -২০১৮’ পাস হয়েছে। এ আইনে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা ও পরিপন্থী উভয় ধারা রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন পাস করা হয়েছে। আইনে সড়ক দুর্ঘটনা মামলায় অপরাধী হয়ে ফাঁসির ঝুঁকি রয়েছে। এমনই অনিশ্চিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পেশায় দায়িত্ব পালন করা শ্রমিকদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কোনো আমাদের সামনে খোলা নেই। এ আইনের সংশোধন ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে রবিবার সকাল ৬টা থেকে দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে।

আরকেএইচ