ঢাকা সোমবার, ২১শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


‘আমরা গড়ে তুলি, বিএনপি-জামায়াত ধ্বংস করে’


২৪ অক্টোবর ২০১৮ ২০:২৯

ছবি ফাইল ফটো

আন্দোলনের নামে কেউ যেন আর জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে না পারে সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বিশ্বের বৃহত্তম বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ‘শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান।

দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ পুড়িয়ে কোনো আন্দোলন হোক, আর চাই না। অতীতে জনগণ তাদের প্রতিরোধ করেছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিরোধ করেছে। ভবিষ্যতেও সরকার যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার নেবে। কেউ যেন ভবিষ্যতে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে না পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গড়ে তুলি, বিএনপি-জামায়াত ধ্বংস করে। তাদের অগ্নিসন্ত্রাসে সেসময় পোড়া মানুষগুলোকে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। আগুনে পুড়ে ৫০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। যারা গাড়ি-ব্যবসা হারিয়েছে, তাদের সাধ্যমতো সাহায্য করেছি। আহতদের অনেককে বিদেশ থেকেও চিকিৎসা করিয়ে এনেছি।

শেখ হাসনিা বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে জনগণ আমাদের সুযোগ দিয়েছে, আমরা উন্নয়ন করছি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হয়েছি। আগামীতেও তারা যদি নৌকায় ভোট দিয়ে কাজের সুযোগ দেন, যে উন্নয়ন কাজ আমরা শুরু করেছি, সেসব সম্পন্ন করতে পারবো। ২০২০ সালের মধ্যে আমরা গড়ে তুলবো ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২০০০ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিট উদ্বোধন করি। এরপর সরকার বদল হওয়ায় এই ইউনিটের কোনো অগ্রগতি হয়নি। নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের পর দেখা গেল, ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে অপারেশন থিয়েটার ও আইসিউ নেই। সে সময় ডা. সামন্ত লাল সেন জানান লোকবলের অভাবে ওটি ও আইসিউ চালু করা যাচ্ছে না। তখন সরকার ৭ দিনের মধ্যে লোকবল দিয়ে ওটি আর আইসিউ চালু করে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আজকে উদ্বোধিত ‘শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটকে বিশ্বমানের ইন্সটিটিউট হিসেবে গড়ে তুলতে অনেক পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। উন্নত মেশিনারিজ আমদানি, ডাক্তার-নার্সহসহ সংশ্লিষ্ট উন্নত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে যাতে কোনো আগুনে পোড়া রোগীকে আর বিদেশে যেতে না হয়।

স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখান থেকে বিশ্বমানের চিকিৎসা দেওয়া হবে। ভবিষ্যতেও প্রতিটি জেলা হাসপাতালে বার্ন ইউনিট গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সামনে নির্বাচন। জনগণ ভোট দিলে আবার ক্ষমতায় এসে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবো। কিন্তু জনগণ ভোট না দিলে অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে। তখন যেন বার্ন ইউনিটের মতো বার্ন ইন্সটিটিউটের কার্যক্রমও থমকে না যায় সেটি আপনারা দেখবেন।

বিশ্বের বৃহত্তম এই বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে থাকছে সর্বাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম, উন্নত প্রযুক্তি, ২৪টি ডাবল, ২৮টি সিঙ্গেল কেবিনসহ মোট ৫০০ টি শয্যা থাকছে এই হাসপাতালে। একসঙ্গে ১০ জন রোগীর অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থাও থাকছে এই হাসপাতালে। নতুন এই হাসপাতাল দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের উম্মোচন করবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের এপ্রিলে এই ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস আগেই প্রস্তুত হয়ে গেছে এই বিশেষায়িত হাসপাতাল।

আরকেএইচ