ঢাকা শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল ২০২৫, ২৯শে চৈত্র ১৪৩১


সরকার চাইলে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম: সিইসি


৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২৩:৪৬

সরকার চাইলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে ইভিএম ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি এসব কথা বলেন।

কে এম নুরুল হুদা বলেন, সরকার যদি চায়, সংসদ যদি চায়, তখন আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এটা (ইভিএম) ব্যবহার করা যাবে। তবে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে বেশ সময় লাগবে।

ইভিএম বিষয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে মেলা করা হবে উল্লেখ করে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, সেখানে আপনারা যারা যাবেন, তারা এখান থেকে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে মানুষদের দেখাবেন, কোথায় ভুল-ত্রুটি আছে। যদি সেটা ত্রুটি যুক্ত থাকে, অবশ্যই সেটা ব্যবহার করা হবে না। আর ব্যবহার করা হবে কি হবে না, সেটার সিদ্ধান্ত আরও পরে।

তিনি বলেন, এখনও আমরা অনেক পিছনের পর্যায়ে রয়েছি। আইন কেবলমাত্র যাবে সরকারের কাছে, তারপরে আরও ধাপ আছে। অর্থমন্ত্রণালয়ের কাছে যাবে যদি এটার আর্থিক সংশ্লেষ থাকে, তারপরে কেবিনেটে ও পার্লামেন্টে যাবে। এরপরই সরকার চাইলে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে।

নুরুল হুদা বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে আমরা শুরু করে দিয়েছি। আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্ভর করবে, আইনকানুনের ওপর, নির্ভর করবে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর, নির্ভর করবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সমর্থনের ওপরে।

তবে যে কোন প্রযুক্তি হোক না কেন অথবা যে কোন উদ্ভাবনী চিন্তা হোক না কেন, প্রথমে এ নিয়ে বাধা-বিপত্তি আসে, প্রথমে এ নিয়ে উৎকণ্ঠা থাকে, প্রথমে এ নিয়ে মানুষ জানতে চায় না। এটা স্বাভাবিক। তারা যদি জানতে না চায় তাহলে এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে কিভাবে।

সিইসি জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। এটার আইনগত কাঠামো ইতোমধ্যে আছে। সেগুলো পরিচালনা করতে অসুবিধা হয় না। ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়নে, ৩৩২টা পৌরসভায়, ৪৯১টা উপজেলায় ইভিএম ব্যবহার করা হবেই।

নুরুল হুদা বলেন, ইভিএম কীভাবে আরও ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি করা যায়, সেটার প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে। আর জাতীয় সংসদে যদি আইন পাস হয়, আমাদের যারা প্রশিক্ষিত লোক আছেন, তাদের সক্ষমতা অর্জন হয় এবং আমাদের যে মেশিনপত্র প্রদর্শন হবে, সেগুলো জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হলে যতখানি সম্ভব ততখানি ব্যবহার হবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনা ইতিবাচকভাবেই দেখছে কমিশন বলে জানান নুরুল হুদা।

তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল, পত্রপত্রিকা কথাবার্তা বলে, আলোচনা-সমালোচনা করে। সচিব সাহেব বলেছেন, এগুলো আমরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখি।

কারণ এদেশের জনগণ, বিশেষ করে যারা প্রথম কাতারের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ তাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা, কীভাবে ইভিএম আসলো, কীভাবে তা প্রয়োগ হবে। এতে প্রাসঙ্গিকভাবেই উৎকণ্ঠা থাকার কথা। সেটা করতে গিয়ে অনেক প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে, তারা অনেক প্রশ্ন করেছেন, এবং জানতে চেয়েছেন। সেটা প্রাসঙ্গিক।

তথ্য-প্রযুক্তিতে আমরা অত্যন্ত উন্নত স্থানে পৌঁছে গেছি বলে জানান নুরুল হুদা।

তিনি বলেন, প্রযুক্তি এখন আর বাক্সের মধ্যে বন্দি নেই। প্রযুক্তি এখন মানুষের হাতে হাতে, মানুষের মনে মনে, মানুষের চিন্তার মধ্যে প্রবেশ করে গেছে। এটা একটা এখন ভালো দিক।

উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী সংলাপে বিএনপিসহ একাধিক রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দেয়।

তবে এ বিষয়ে গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাড়াহুড়া করে ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন।

একেএ