রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আবারও মিথ্যাচার মিয়ানমারের

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আবারও মিথ্যাচার করেছে মিয়ানমার। দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক ওয়েবসাইটে একটি রোহিঙ্গা পরিবারের রাখাইনে ফিরে যাওয়ার কথা জানানো হলেও বাংলাদেশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অবগত নয়।
গ্লোবাল নিউ লাইটস অব মিয়ানমার সূত্রে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পাঁচ সদস্যের একটি বাস্তুচ্যুত পরিবার ১০ অক্টোবর রাখাইনের মংতো জেলার তং পিয়ো লেতওয়ে অভ্যর্থনা কেন্দ্রে ফিরেছে।
বাংলাদেশ ওই রোহিঙ্গা পরিবারের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে অবগত নয়। কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেছেন, একটি রোহিঙ্গা পরিবার ফেরত গেছে বলে শোনা গেছে, তবে তাদের পৌঁছানোর ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানা যায়নি। তিনি আরও বলেন, ‘কেউ চাইলে ফিরে যেতে পারে। তবে আনুষ্ঠানিক প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।’
বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী দিনে ১৫০ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করার কথা ছিল মিয়ানমারের। এজন্য ট্রানজিট ক্যাম্পও বানিয়েছে মিয়ানমার। তবে গত জুনে এএফপির এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সময়ই খালি পড়ে থাকে ক্যাম্পগুলো। মিয়ানমারের অভিবাসন কর্মকর্তারা কাগজপত্র নিয়ে এই ট্রানজিট ক্যাম্পে অপেক্ষা করেন। প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করেন সাংবাদিকরা।
কেবল রোহিঙ্গাদের দেখা মেলে না সেখানে। মিয়ানমারের অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তা উইন খাইং সে সময় বলেছিলেন, ‘জানুয়ারি থেকেই আমরা তাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত।’ তবে এএফপি তাদের অনুসন্ধানে জানিয়েছিল, রোহিঙ্গারাও নিরাপত্তার অভাবে মিয়ানমারে ফিরতে রাজি হচ্ছেন না। মিয়ানমারও নিরাপত্তা নিশ্চিতের শক্তিশালী কোনও আশ্বাস দিতে পারছে না।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়।
এসএ