আদালতের পথে আসামিরা

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ৩১ জন আসামিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। বুধবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে তাদের পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার সুব্রত কুমার জানান, কেন্দ্রীয় কারাগার ১ ও ২- এ থাকা ১৪ আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টুও রয়েছেন।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, হাইসিকিউরিটিতে থাকা ১৭ জন আসামিকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এই কারাগারে থাকা ১৭ আসামিই হুজি নেতা।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১ ও ২-এ থাকা আসামিদের মধ্যে বাবর-পিন্টু ছাড়াও রয়েছেন হুজি নেতা আরিফ হাসান সুমন ও মওলানা আব্দুর রউফ, পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, অতিরিক্ত আইজি খোদা বকস, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমীন, এএসপি আব্দুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমান, ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা আরিফুর রহমান আরিফ, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।
অধিকতর তদন্ত শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ জুন দেওয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়। তখন জানা যায়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হামলার ছক করা হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে এসেছিল হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। দুই বছর তদন্তের পর ২০১১ সালের ৩ জুলাই ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বিচারক রায় ঘোষণার এ তারিখ ঠিক করেন। রাষ্ট্রপক্ষ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি এবং আসামিপক্ষ খালাসের দাবি করেছে। দুই মামলায় মোট আসামি ছিল ৫২ জন। ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় এখন আসামি ৪৯ জন।
আরকেএইচ