ঢাকা রবিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৫, ৮ই বৈশাখ ১৪৩২


অপেক্ষার অবসান হচ্ছে আজ


১০ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৫৯

ছবি ফাইল ফটো

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে নারকীয় সেই গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষনা করা হবে আজ বুধবার। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারক শাহেদ নূরউদ্দিন এ রায় ঘোষণা করবেন। এরমধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৪ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে বিচারপ্রার্থীদের।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বিচারক রায় ঘোষণার এ তারিখ ঠিক করেন। রাষ্ট্রপক্ষ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি এবং আসামিপক্ষ খালাসের দাবি করেছে। দুই মামলায় মোট আসামি ছিল ৫২ জন। ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় এখন আসামি ৪৯ জন।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, আমরা আসামিদের স্বীকারোক্তি, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিক ও ডকুমেন্টারি সাক্ষীর মাধ্যমে সব আসামির বিরুদ্ধে সন্দেহের ঊর্ধ্বে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি ট্রাইব্যুনাল আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করবেন। রাষ্ট্রপক্ষের অপর আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল বলেন,

রাষ্ট্রীয় মদদে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। একটি চেইন অব কমান্ডের নির্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে ও পরে কাজ করেছে আসামিরা। সেই হিসাবে সবাই সমান অপরাধী। তাই সব আসামির মুত্যুদণ্ডের শাস্তি প্রত্যাশা করছি।

মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার স্টেট ডিফেন্স ল ইয়ার বা রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আবুল কালাম মো. আক্তার হোসেন তার মক্কেলের কী রায় প্রত্যাশা করেন এমন প্রশ্নে কোনো মন্তব্য থেকে বিরত থেকেছেন।

আরেক আসামি বিএনপি জোট সরকারের আমলের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। তার আইনজীবী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাবর সাহেবকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় আরও ১২ আসামি স্বীকারোক্তি দিলেও তাতে বাবর সাহেবের নাম বলেননি। শুধু মুফতি হান্নানের প্রশ্নবিদ্ধ স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাবর সাহেবকে দণ্ড দেওয়া ঠিক হবে না।

খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব) সাইফুল ইসলাম ডিউকের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, আমরা মনে করি মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় স্বীকারোক্তি দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলটির যেসব নেতাকে আসামি করা হয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষ তাদের কারো বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। আমার বিশ্বাস, তারা সবাই খালাস পাবেন।

সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম তারা মিয়া বলেন, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তাই তিনি মনে করেন, তার মক্কেল খালাস পাবেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় চার্জশিট হয় ২টি। একটি বিস্ফোরক আইনে, অন্যটি দণ্ডবিধি আইনে। দুই চার্জশিট মিলিয়ে মোট আসামি ছিল ৫২ জন। তাদের মধ্যে অন্য মামলায় তিন আসামির ইতোমধ্যেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এ জন্য এ তিনজনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন ট্রাইব্যুনাল। বর্তমানে মোট আসামি ৪৯ জন, যারা প্রত্যেকেই দণ্ডবিধি (হত্যা) মামলার আসামি। তাদের মধ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় আসামি ৩৮ জন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসি হয়েছে। ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার মামলায় হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নান এবং শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের ফাঁসি হয়েছে।

আরকেএইচ