ঢাকা শনিবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৫, ৭ই বৈশাখ ১৪৩২


‘বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে’


৫ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৪৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী প্রজন্মের উন্নত জীবনের লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে না। নিজের শ্রম দিয়ে ও মেধা দিয়ে এ দেশকে গড়ে তুলবে।

তিনি বলেছেন, জাতির পিতা সব সময় চাইতেন আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) বলতেন- ‘ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না।’ ভিক্ষুক জাতি হিসেবে নয়, আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে চলেছি।

‘উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন উপজেলার উপকার ভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীসহ দেশের জেলা, উপজেলাগুলোতে উন্নয়ন মেলার মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। মেলায় উদ্ভাবনী বিভিন্ন প্রকল্প উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এই মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। বাংলাদেশ তখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন ছিল। সাক্ষরতার হার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে তৈরি করেছিলাম। দেশের জন্য সেটা স্বর্ণযুগ ছিল। কিন্তু ২০০১ সালে বেশি ভোট পেয়েও কোনো একটা চক্রান্তের কারণে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। সাতটি বছর মানুষের জীবন থেকে হারিয়ে যায়।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে ফের জনগণের ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসে মানুষের জন্য স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি। দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের জীবনমান উন্নত করা, তাদের সুন্দর জীবন উপহার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সব আয়োজন তারুণ্যের জন্য। যারা দেশকে কিছু উন্নতি দিতে পারবে, নিজের ভাগ্যও গড়তে পারবে। তাদের পরিবারগুলোও সুন্দরভাবে বাঁচবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের আজকের শিশু, আগামী দিনের তরুণ; তারাই এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়ন কোনো একটি জায়গায় নয়, সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছি। আশা করি, এই উন্নয়ন মেলার মাধ্যমে আমাদের দেশের মানুষ তাদের জন্য আমরা কী উন্নয়ন করলাম এবং সে উন্নয়নের মধ্য দিয়ে তারা কিভাবে নিজের ভাগ্যকে গড়তে পারবে, সেটা দেখার সুযোগ তারা পাবে এবং সেই সুযোগটা তারা গ্রহণ করবে। সেই চিন্তা থেকেই আজকের এই উন্নয়ন মেলা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হলো চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে চলবে তিন দিনের এ মেলা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুরুতে উন্নয়ন মেলার থিম সং’টি শোনানো হয়। এছাড়াও সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পদক্ষেপের একটি ভিডিও চিত্রও দেখানো হয়।

জাতীয় উন্নয়ন মেলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার ‘অনলাইন ডিজিটাল পাঠ সহায়িকা’ থাকছে।

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ‘অনলাইন ডিজিটাল পাঠ সহায়িকা’ উপহার হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখলাম-পাসের হার বৃদ্ধি পেলেও সেখানে কয়েকটি বিষয়ে ছেলেমেয়েরা পিছিয়ে আছে। আমরা চাই না এই আধুনিক যুগে, ডিজিটাল যুগে কেউ পিছিয়ে থাকুক।

শেখ হাসিনা বলেন, এবারের উন্নয়ন মেলায় আমরা একটা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। সেটা হলো এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য আমার পক্ষ থেকে একটা উপহার। সেটা হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের জন্য বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে অনলাইন ডিজিটাল পাঠ সহায়িকা। অর্থাৎ অনলাইনে তারা এ বিষয়গুলোতে যাতে শিক্ষা নিতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছি। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণির জন্য বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন ডিজিটাল পাঠ সহায়িকা করা হবে বলে জানান তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আরকেএইচ